বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫
বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ সালে আমরা নতুন একটি বছর পাবো। আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন বাংলা ক্যালেন্ডার সম্পর্কে। বাঙালি হিসেবে আমাদের প্রত্যেক বাঙালি বাংলা ক্যালেন্ডার সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। কারণ বাংলা বছর আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সবারই বাংলা মাসের কোন দিনে কি আছে সে সম্পর্কে জানা দরকার। আর দেরি না করে চলুন
আমরা আজকে বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
সূচিপত্রঃ বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ সম্পরকে বিস্তারিত দেখুন
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের বৈশাখ মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের জ্যৈষ্ঠ মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের আষাঢ় মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের শ্রাবন মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের ভাদ্র মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের আশ্বিন মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের কার্তিক মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের অগ্রায়ন মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের পৌষ মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের মাঘ মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের ফাল্গুন মাস
- বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ এর চৈত্র মাস
- ২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের সরকারি ছুটি সমূহ
- বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের বৈশাখ মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের বৈশাখ মাস হলো বাংলা বছরের প্রথম মাস। পহেলা
বৈশাখ দিয়ে বাংলা বছরের শুরু হয়। এই দিনটি নতুন বছরে সূচনা হিসাবে আমরা সবাই
পালন করে থাকি। পহেলা বৈশাখ পুরানো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে
নেয়। পহেলা বৈশাখের মাধ্যমে আমরা পুরনো বছরের সমস্ত স্মৃতিকে ভুলে নতুন বছরের
আনন্দে সবাই মেতে উঠি।
বৈশাখ মাস শুরু হয় ইংরেজি মাসের এপ্রিলের মাঝামাঝিতে। বৈশাখ মাসের বিভিন্ন
বৈচিত্র রয়েছে। বৈশাখ মাস যেহেতু পহেলা বৈশাখ দিয়ে শুরু হয় সেহেতু পহেলা
বৈশাখের সকল রিচুয়াল বাঙালিরা পালন করে। এই দিনে সবাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে
গোসল করে নতুন কাপড় পরিধান করে বন্ধু পাড়া-প্রতিবেশী সবার সাথে পান্তা ভাত ইলিশ
ভাজা খেয়ে থাকে।
বৈশাখ মাসে বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে দোকানে দোকানে হালখাতার ব্যবস্থা করা হয়।
এই দিনে পুরনো দিনের সকল হিসাব বন্ধ করে নতুন বছরের হিসাব। দোকানে দোকানে
হালখাতার জন্য মিষ্টি বিতরণ করা হয়। তাছাড়া আরো অনেক কিছুই দিয়েই আপ্যায়ন করা
হয় নববর্ষকে। মূলত সম্রাট আকবরের সময় থেকে এই বাংলা নববর্ষ পালন করা হয়।
সম্রাট আকবরের সময়ে তখনকার দিনের কৃষকরা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা
শুল্ক পরিষদ করে থাকতো এরপর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখী মেলা আয়োজন করত নতুন করে
তারা তাদের জমির মালিকানা ফিরে পাওয়ায় সবার মাঝে মিষ্টি বিতরণ করতো। এটি হচ্ছে
পহেলা বৈশাখের পুরানো ঐতিহ্য। বৈশাখ মাসের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কালবৈশাখীর ঝড়
ঝড় হয়।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের জ্যৈষ্ঠ মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের জ্যৈষ্ঠ মাস হচ্ছে বছরের দ্বিতীয় বাংলা মাস।
জৈষ্ঠ্য মাসে প্রচন্ড গরম থাকে। এই তীব্র গরমে মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে পড়ে।
জৈষ্ঠের গরমে সকল প্রকার মৌসুমী ফল পাওয়া যায়।জ্যৈষ্ঠ মাসে মৌসুমী ফলের গন্ধে
মেতে ওঠে চারদিক। মৌসুমী ফলে মধ্যে রয়েছেন আম জাম লিচু কাঁঠাল প্রায় সকল ধরনের
ফল।
জৈষ্ঠ মাসে আমাদের মধ্যে কিছু রিচুয়াল্স আছে। যেমন এই মাসে সকল প্রকার মৌসুমী ফল
পাওয়া যায় আর এই মৌসুমী ফল নিয়ে নতুন জামাই তার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়।
এটা বাঙ্গালীদের একটা উৎসব বলতে পারেন। এছাড়াও জৈষ্ঠ মাসে আরো কিছু উৎসব রয়েছে।
এই মাসে হিন্দুদের বড় উৎসব তীর্থযাত্রা হয়।হিন্দু ধর্মালম্বীরা এই মাসটিকে
ধার্মিক উৎসবের সাথে শুভেচ্ছা জানাই নারদজয়ন্তী অপরা একাদশী, বট সাবিত্রী ব্রত,
শনি জয়ন্তী,গঙ্গা দশেরা, নির্জলা একাদশী, বট পূর্নিমা ব্রত ইত্যাদি।জৈষ্ঠ মাসে
বৈশাখ মাসের মতোই অনেক ঝড় বৃষ্টি হয় এজন্য অনেক অনেক সমস্যায় পড়ে।
জ্যৈষ্ঠ মাসের ইরি মৌসুমের ধান আসে। মাসে প্রচন্ড তাপদাহে কৃষকরা অনেক কষ্ট করে
জমি থেকে ধান কেটে নিয়ে আসে। মূলত বৈশাখ মাসের শেষের দিকে থেকে এই ইরির ধান কাটা
শুরু হয় এবং জ্যৈষ্ঠ্য মাসের শেষ হয় ধান কাটা। গ্রামের মানুষ এই মৌসুমকে ফসল
আসার বড় মৌসুম বলে আখ্যা দেয়। জৈষ্ঠ মাসের ঝরে কৃষকদের ধার নিয়ে অনেক কষ্ট
করতে হয়।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের আষাঢ় মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের আষাঢ় মাস হল বাংলা বছরের তৃতীয় মাস। এই মাস
মূলত ইংরেজির জুন মাসের মাঝামাঝিতে এই মাস পরে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। এর মধ্যে
বর্ষাকাল একটি ঋতু। বর্ষাকাল হয় আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস কে নিয়ে। আসার মাসে প্রচুর
বৃষ্টিপাত হয়। এই মাসে সব সময় আকাশ কালো মেঘে ঢেকে থাকে।
আকাশ মেঘে ঢেকে থাকার কারণে যে কোন সময় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই কারণে
সাধারণ মানুষ নানা সমস্যায় পড়ে। যারা গরিব মানুষ তারা তাদের জীবিকা নিয়ে
টেনশনে থাকে। কেননা আষাঢ় মাসে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের হয়
না। এইজন্য ব্যবসা-বাণিজ্য সব জায়গায় মানুষের সমাগম কম থাকে।
আষাঢ় মাসে গাছ লাগানোর উত্তম সময়। গাছ রোপন করলে নিয়মিত পানি দিতে পানি ছাড়া
গাছ মরে যায় তাই বলা যায় গাছ লাগানোটাই উত্তম কারণ এই সময় সব সময় পানি থাকে।
আষাঢ় মাসে আম পাওয়া যায়। আষাঢ় মাসের আম বলা হয়। আষাঢ় মাসের আমগুলো অনেক
মিষ্টি প্রকৃতির হয়ে থাকে।
বর্ষাকাল বলতে আষাঢ় মাসে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারণে নদী নালা খাল বিল ভরাট থাকে
এ সময় প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। বিশেষ করে আষাঢ় মাসে ছোট মাছ বেশি পাওয়া
যায়।বর্ষাকালে আষাঢ় মাসে যারা মাছ বিক্রি করে তারা অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান
হয়। কারণ এটাই তাদের মাছের বড় মৌসুম। বর্ষাকালে নতুন শাকসবজি পাওয়া যায়।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের শ্রাবন মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের শ্রাবণ মাস হচ্ছে বাংলার চতুর্থ মাস। জুলাইয়ের
মাঝামাঝিতে শ্রাবণ মাসের শুরু হয় আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে শ্রাবণ মাসের শেষের
ঘন্টা বাজে। শ্রাবণ এমন একটা মাস যেখানে বর্ষাকালে পরিপূর্ণতা পায়। আষাঢ় শ্রাবণ
মিলে বর্ষাকাল। বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টি হয় যা আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু
হয় শ্রাবণে শেষ হয়।
আরো পড়ুনঃ ২০২৫ সালের আরবি ক্যালেন্ডার
শ্রাবণ মাস হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষের কাছে পবিত্র মাস। কারণ এই মাসে হিন্দুরা
শিবের পূজা করে। এই শ্রাবণ মাসের যে কয়টা সম্পর্ক করে প্রত্যেকটা সোমবারে হিন্দু
ধর্মাবলম্বী লোকজন শিবের পূজা করে। শ্রাবণ মাসে হিন্দুদের ভাগ্য পরিবর্তনের মাস
বলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা। হিন্দুরা এটাই বিশ্বাস করে।
আষাঢ় মাসেই কদম ফুল ফোটে না পুরো বর্ষাকাল জুড়ে কদম ফুলের সমাহার থাকে। বলতে
শ্রাবণ মাসও কদম ফুল ফোটে। শ্রাবণ মাসে বেশি বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টির কারণে শহর
গ্রাম উভয় জায়গার পরিবেশ বিপন্ন অবস্থায় পরিণত হয়। শ্রাবণ মাসে অতিরিক্ত
বৃষ্টির কারণে বন্যার আশঙ্কা দেখা দেয়।
বন্যার কারণে নিচু এলাকাগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে জনজীবনের প্রচুর কষ্ট
হয়। অনেক মানুষ ঘরবাড়ি হারায়। এই সময় বন্যায় প্লাবিত এলাকার মানুষের খাবারের
অভাব হয় থাকার কষ্ট হয়। চিকিৎসার অভাব হয় এবং অনেক মানুষ মারাও যায়। এই
বর্ষাকালে বেশি কষ্ট পায় শিশুরা।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের ভাদ্র মাস
২০২৫ সালের বাংলা বছরের ভাদ্র মাস হচ্ছে বাংলার পঞ্চম মাস। ভাদ্র মানে ভ্যাপসা
গরম। এই ভ্যাপসা গরমে তালপাকে। চারিদিকে শুধু তালের গন্ধে মম করে। বর্ষার পরেই
আসে শরৎকাল। আর ভাদ্র আশ্বিন এই দুই মাস নিয়ে শরৎকাল। বর্ষাকালের বৃষ্টির পর আসে
ভাদ্র মাসের ভ্যাপসা গরম।
এই ভ্যাপসা গরম মানুষকে অতিষ্ট করে তোলে। তবে ভাদ্র মাসে একটি বড় পাওয়া হচ্ছে
তালের পিঠা তালের ক্ষীরসা তালের বড়া তালের হরেক রকমের খাবার খাওয়া। এটা বাঙালির
একটা উৎসব বলা যায়। ১৫ আগস্ট থেকে শুরু হয় ভাদ্র মাস। শহরের মানুষেরা ভাদ্র মাসে
গ্রামে ভিড় জমায় শুধু তাল পিঠা খাওয়ার জন্য।
ভাদ্র মাসে মুসলমানদের আরেকটি উৎসবের নাম হচ্ছে ঈদে মিলাদুন্নবী। এবং ভাদ্র মাসে
হিন্দুদের একটি উৎসব আছে সেটি হচ্ছে শুভ জন্মাষ্টমী। বাংলাদেশ ১২ মাসে ১৩
পার্বণের দেশ। বাংলাদেশে ভাদ্র মাসে প্রচলিত একটি উৎসব আছে। যেটি বাংলাদেশের
উত্তরবঙ্গে খুব জনপ্রিয়। সেটি হচ্ছে ভাদর কাটানি।
এই ভাদরকাটানি উৎসবটি রংপুর নীলফামারী লালমনিরহাট এ অঞ্চল গুলোতে হয়ে থাকে। এই
উৎসবটি পহেলা ভাদ্র থেকে শুরু করে ১৫ ভাদ্র পর্যন্ত থাকে।ভাদ্র মাস পুরোটা
অস্থিতি কর একটা পরিবেশ।ভাদ্র মাসে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
এর মধ্যে ওঠানামা করে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে এজন্য অতিরিক্ত গরম
অনুভব হয়।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের আশ্বিন মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের আশ্বিন মাস বাংলা সনের ষষ্ঠ মাস।আশ্বিন মাস
ইংরেজি মাসের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় এবং অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে
শেষ হয়। বাংলা মাস বৈশাখ থেকে আসন পর্যন্ত এ কয়টি বাংলা মাস ৩১ তারিখের মাস শেষ
হবে এটাই বাংলা মাসের নিয়ম।
বাংলার মানুষ বলে আসেন মানে গা শিনশীন করা অবস্থা তার মানে শীতের আভাস দিচ্ছে
আশ্বিন মাস। আশ্বিন মাস থেকে হালকা হালকা ঠান্ডা হওয়া বইতে থাকে।আশ্বিন মাসের
কয়েকটা বৈশিষ্ট্য হলো আশ্বিন মাসে কাশবনের কাশফুল ফুটে থাকে। আশ্বিন মাসে
ভোরবেলায় সবকিছুর উপর হালকা হালকা কুয়াশার আমেজ দেখা যায়।
আশ্বিন মাসের সাদা আকাশ আর সাদা কাশ বনের অপরূপে সজ্জিত প্রকৃতি বাংলার মানুষের
মনে আনন্দ এনে দেয়।আশ্বিন মাসে নদী খাল বিল সব জায়গায় সাদা লাল শাপলায় ভরে
যায়। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য আশ্বিন মাসে বেশি দেখা যায়।আশ্বিন মাসে
হিন্দুদের বড় উৎসব দুর্গাপূজা হয়। এই পূজার জন্য তারা সারা বছর অপেক্ষায় থাকে।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের কার্তিক মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের কার্তিক মাস বাংলা বছরের সপ্তম মাস। এই মাসটি
অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখ থেকে শুরু করে নভেম্বর ১৪ তারিখে শেষ হয়। কার্তিক মাস
হেমন্তকালের প্রথম মাস। কার্তিক মাসের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষরা কালীপূজা,
লক্ষী পূজা, ভাইফোঁটা এই উৎসবগুলো পালন করে এটি মূলত কার্তিক একাদশী দীপাবলি।
কার্তিককে দুই ঋতুর মোহনা বলা হয়। কার্তিক আবহাওয়া অনেক ভালো হয়। কার্তিক
মাসের আবহাওয়া অন্য একটা আরামদায়ক আবহাওয়া।কার্তিক মাস থেকে খাল-বিল নদী নালার
পানি সুখতে থাকে। বর্ষায় যেমন চারিদিকে নদী নালায় পানি থৈথৈ করত কিন্তু
কার্তিকের সময় থেকে সবকিছু শুকাতে থাকে।
কালবেলে ভরে থাকা শাপলা ফুলগুলো শুকাতে থাকে। কচুরিপানাগুলো আস্তে আস্তে সুখে
পসতে শুরু করে যা পরবর্তীতে মিথেন গ্যাসে পরিণত হয়। আশ্বিনের শেষ হয়ে কার্তিক
শুরু হওয়ার থেকে মানুষের হাত পা মুখ ফুসফুসে হতে থাকে। এ থেকে বোঝা যায় শীত এসে
গেছে শীতের আভাস লেগেছে।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের অগ্রায়ন মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের অগ্রহায়ণ মাস বাংলা বছরের অষ্টম তম মাস। এই
মাসটি ইংরেজি মাসের নভেম্বর মাসি শুরু হয়। নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে ডিসেম্বর
মাসের ১৪ তারিখের মধ্যে এই মাস থাই হয়। অগ্রহায়ণ মাসে কৃষকদের মুখে হাসি
ফোটে।কারণ এই মাসে কৃষকরা নবান্নের ধান ঘরে তোলে।
আর এই নবান্নের ধান ঘরে তুলে কৃষকেরা নতুন ধানের চাল করে ও নতুন চালের পিঠা তৈরি
করে উৎসব পালন করে। অগ্রায়ন মাসের প্রথম দিনটি নবান্ন।অগ্রায়ন মাসে নতুন নতুন ফসল
ওঠে যাক কৃষকের জীবিকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই মাসে নতুন ফসল
ঘরে তোলে কৃষকরা সেটি সংগ্রহ করে রাখে সারা বছরের জন্য।
হিন্দু সমাজের মানুষেরা অগ্রায়ন মাসকে বিয়ের জন্য পবিত্র মাস বলে মনে করে। বিশেষ
করে হিন্দু সমাজের মানুষেরা অগ্রায়ন মাসে কেন্দ্র করে বিয়ে-শাদীর জন্য তোড়জোড়
করে। নবান্ন উৎসবের সাথে সাথে হিন্দু ধর্মালম্বির লোকেরা লক্ষী পূজা করে। নতুন
ষষ্ঠের সাথে সাথে তারা ঘরের লক্ষ্মীকে আগমন করে লক্ষী পূজার মধ্য দিয়ে।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের পৌষ মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের পৌষ মাস বাংলা সনের নবম মাস। পৌষ মাস মূলত ইংরেজি
মাসের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। পৌষ মাস ডিসেম্বরের সতেরো থেকে শুরু করে
জানুয়ারি ১৬ তারিখের মধ্যে স্থায়ী হয়। পৌষ মানে শীতকাল। শীতকাল মানে বাঙালির
পিঠার উৎসব। বাংলাদেশে মানুষেরা শীতকালে নানা ধরনের পিঠা তৈরি করে।
শীতকালে শুধু গ্রামের মানুষেরাই পিঠা তৈরি করে না শহরের মানুষেরা পিঠা তৈরি করে।
শহরের বিভিন্ন রাস্তার আনাচে-কানাচে শীতের সকালে এবং সন্ধ্যার দিকে গরম গরম ভাপা
পিঠা চিতই পিঠা পুলি পিঠা কুসলি পিঠা হরেক রকমের পিঠা কিনতে পাওয়া যায়।তবে
শহরের চাইতে গ্রামের মানুষেরাই বেশি পিঠা বানাই এবং অতিথি আপ্যায়ন করে।
শীতের সময় সকল স্কুল কলেজে পিঠা উৎসব করা হয়। এই পিঠা উৎসব করার মাধ্যমে বাংলার
ঐতিহ্যকে বজায় রাখে বাঙালি মানুষেরা।পৌষ মাসে গ্রাম বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে পৌষ
মেলা আয়োজন করা হয়।এই মেলাতে গ্রামের মা চাচিরাহরেক রকমের পিঠা বানায়। পৌষ
মাসের শেষ দিনে বাংলাদেশের পৌষ সংক্রান্তি দিবস পালন করা হয়।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের মাঘ মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের মাঘ মাস বাংলা বছরের দশতম মাস।বাংলায় কার্তিক
থেকে চৈত্র পর্যন্ত মাসগুলো হবে ৩০ দিনের। এটা বাংলা ক্যালেন্ডারের নিয়ম। মাঘ
মাস ডিসেম্বরের ১৫ থেকে শুরু করে জানুয়ারি ১৫ তারিখ পর্যন্ত তাই হয়। মাঘ মাস
হলো শীতকাল। মাঘ মাসে প্রচন্ড পরিমাণে শীত পড়ে।
মাঘ মাসে দিনে যেটুকুই তাপমাত্রা থাকে রাতের বেলায় আরও বেশি নিম্নচাপ দেখা দেয়।
বিশেষ করে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে শীত দেখা দেয়। রংপুর
কুড়িগ্রাম এসব এলাকাতে মাঘ মাসে নিম্নচাপ বেশি দেখা দেয়। অতিরিক্ত শীতের কারণে
এ এলাকার মানুষ ঘর থেকে জীবিকার জন্য বের হতে পারেনা।
মাঘ মাসে ঘন কুয়াশার কারণে জন মানবের চলাফেরা কষ্টকর কঠিন হয়ে পড়ে। এই সময়ে
বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।মাঘ মাসের শেষের দিকে সাধারণত ৩০ তারিখের
কয়েকটা দিন আগে থেকে হালকা বৃষ্টি দেখা দেয়।এই মাসেখেজুর গাছে রস থেকে রস নিয়ে
খেজুরের গুড় তৈরি করা হয়।
যেহেতু পৌষ মাস দুই মাস মিলে শীতকাল এই শীতকালে পিঠার জুরি নেই। এই মাসে খেজুরের
গুড় থেকে নানা রকমের পিঠা বানানো হয়। এবং কৃষকরা শীটকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন
শাকসবজির চাষাবাদ করেন এবং এই মাসে বাজারে নতুন নতুন শাকসবজি যেমন ফুলকপি,
বাঁধাকপি টমেটো লাল শাক পালং শাক ইত্যাদি তুলে।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের ফাল্গুন মাস
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের ফাল্গুন মাস বাংলা সনের আরেকটি মাস। ফাগুন মাসে
খ্রিস্টপূর্ব অষ্টমসাল নাগাদ অগাস্টাসের নাম অনুসারে ফাল্গুন মাসের নামকরণকরা
হয়। ফাল্গুন মাস উত্তর ও পূর্ব ফাল্গুনী নক্ষত্রের নাম অনুসারে করা হয়েছে।
ফাল্গুন মাস ইংরেজি ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে পড়ে।
ফাল্গুন মাস হচ্ছে ২৯ দিনের। শুধু লিপইয়ার বছরগুলোতে ফাল্গুন মাস ৩০ দিনের হয়।
বাংলাদেশে পহেলা ফাল্গুন উদযাপন করা হয়। পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে সরকারের
প্রতিষ্ঠানগুলো এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফুলে ফুলে সাজিত করা হয় এবং
অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়।
ফাগুন মাসে প্রাকৃতির পরিবর্তন দেখা যায়। ফাল্গুন মাসের পরিবর্তনটা এমনই হয় যা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অপরূপ রূপে সজ্জিত করে। চারিদিকে গাছে গাছে নতুন পাতা নতুন
ফুল নতুন ফল দেখা যায়। ফাল্গুন মাস ইংরেজি মাসের দ্বিতীয় মাস। ফাল্গুন মাসের
আবহাওয়া স্বাভাবিক তাপমাত্রার হয়ে থাকে।
বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ এর চৈত্র মাস
বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ এর চৈত্র মাস বাংলা সনের দ্বাদশ ও সমাপনি মাস। বাংলা
চৈত্র মাসে ৩০ দিনের। চৈত্র মাস ইংরেজি মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে শুরু হয়। চৈত্র
মাসের আবহাওয়া সবচাইতে খারাপ।চৈত্র মাসে প্রচুর পরিমাণে তাপমাত্রা দেখা দেয়। এই
ওদিক তাপমাত্রার কারণে খাল বিল শুকিয়ে পানি শূন্য হয়ে যায়।
২০২৫ সালের ইংরেজি মার্চ মাস ও বাংলার চৈত্র মাসে মুসলমানদের পবিত্র রমজান আসবে।
এই মাসকে আরবিতে রমজান মাস বলা হয়। এই রমজান মাস মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত
মূল্যবান ও পবিত্র মাস। চৈত্র মাস ৩১ দিনের হয়ে থাকে। চৈত্র মাসের দিনের সময়
বেড়ে যায় ও রাতের সময় কমে যায়।
চৈত্র মাসের বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অধিক ঢাকায় প্রচন্ড গরম অনুভব হয় এবং
গরম বাতাস বইতে থাকে। চৈত্র মাসের শেষ তারিখে চৈত্র সংক্রান্তি হয়। বাংলা মাসের
শেষ দিনকে চৈত্র সংক্রান্তি বলা হয়। আবহমান বাংলার চিরাইত বিভিন্ন ঐতিহ্যকে ধারণ
করে আসছে এই চৈত্র সংক্রান্তি। এগুলো জানার জন্য বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ সম্পর্কে
ধারনা থাকা দরকার।
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের সরকারি ছুটি সমূহ
২০২৫ সালের বাংলা ক্যালেন্ডারের সরকারি ছুটি সমূহ, ২০২৫ সালের সরকারি বিভিন্ন
ধরনের ছুটি রয়েছে। যেগুলো জান আমাদের অত্যন্ত জরুরী। নিম্নে ২০২৫ সালের সরকারি
ছুটিসহ দেখানো হল।
তারিখ | মাস | দিন | ছুটি |
---|---|---|---|
১৪ | ফেব্রুয়ারি | শুক্রবার | শব-ই-বরাত |
২১ | ফেব্রুয়ারি | শুক্রবার | শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস |
১৭ | মার্চ | সোমবার | জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী |
২৬ | মার্চ | বুধবার | স্বাধীনতা দিবস |
২৭ | মার্চ | বৃহস্পতিবার | শব-ই-কদর |
২৮ | মার্চ | শুক্রবার | জুমাতুল বিদা |
৩১ | মার্চ | সোমবার | ঈদুল ফিতর |
১ | এপ্রিল | মঙ্গলবার | ঈদুল ফিতর |
২ | এপ্রিল | বুধবার | ঈদুল ফিতর |
১৪ | এপ্রিল | সোমবার | পহেলা বৈশাখ |
১ | মে | বৃহস্পতিবার | মে দিবস |
৫ | মে | সোমবার | বুদ্ধ পুর্নিমা |
৬ | জুন | শুক্রবার | ঈদুল আযহা |
৭ | জুন | শনিবার | ঈদুল আযহা |
৮ | জুন | রবিবার | ঈদুল আযহা |
৬ | জুলাই | রবিবার | আশুরা |
১৫ | আগস্ট | শুক্রবার | জাতীয় শোক দিবস |
১৬ | আগস্ট | শনিবার | শুভ জন্মাষ্টমী |
৫ | সেপ্টেম্বর | শুক্রবার | ঈদে মিলাদুন্নবী |
২ | অক্টোবর | বৃহস্পতিবার | বিজয়া দশমী |
১৬ | ডিসেম্বর | মঙ্গলবার | বিজয় দিবস |
২৫ | ডিসেম্বর | বৃহস্পতিবার | বড়দিন |
বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৫ সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলটি ২০২৫ সাল নিয়ে বিস্তারিত লেখা হয়েছে। আশা করছি
আপনি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা
পাবেন। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে এই ক্যালেন্ডারট পড়েন আশা করি
আপনি ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডারের সবকিছু জানতে পারবেন ও উপকৃত হবেন। ধন্যবাদ।
রিজু ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url