গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবার
গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। গর্ভকালীন
অবস্থায় একজন গর্ভবতী উপকারী খাবারের মাধ্যমে সুস্থ থাকে। গর্ব অবস্থায়
সঠিক খাবারের মাধ্যমে মা ও শিশু নানা সমস্যার থেকে বাঁচাতে পারে।
এজন্য গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভকালীন সময়ে ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়া দরকার।
আজকে এমনি দশটি ভিটামিন যুক্ত খাবারের তালিকা তুলে ধরব।
সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবার সমূহ
- গর্ভাবস্থায় ডিমের উপকারিতা
- ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় শাকের উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি জাতীয় খাবারের উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ডালের উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় মাংস খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা
- গর্ভাবস্থায় মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবার সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
গর্ভাবস্থায় ডিমের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডিমের উপকারিতা অনেক। গর্ভাবস্থায় গর্ভের শিশুর যে ব্রেন বা
মস্তিষ্ক তৈরি হচ্ছে সেটির যাতে সঠিকভাবে তৈরি হয় সে ক্ষেত্রে ডিমের ভূমিকা
অন্যতম। ডিমে রয়েছে কোলিন। সাধারণত মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট গুলোতে কোলিন
থাকে না। এইজন্য করলেন পেতে হলে ডিমের ভূমিকা অন্যতম। ডিমে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণ কোলিন।
আরো পড়ুনঃ
ডিমের পুষ্টি গুন সমূহ আলোচনা
ডিম হল কোলিনের অন্যতম একটি উৎস। এছাড়াও ডিমের নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান
আছে। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। ডিম খাওয়ার সময় সবসময় মনে
রাখবেন ডিমটা যেন কাঁচা না থাকে। কাঁচা ডিম খেলে শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করবে।
আমরা অনেক সময় কাচা ডিমের অনেক কিছু খেয়ে থাকি। গর্ভাবস্থায় কাঁচা ডিমের কিছু
খাওয়া যাবে না।
গর্ভাবস্থায় সিদ্ধ ডিম খাওয়ার সময় আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে ডিমটা
পুরোপুরি সিদ্ধ হয়। ডিমের কুসুম যাতে কোনোভাবেই নরম না থাকে। কারণ এতে
ব্যাকটেরিয়া থাকার সম্ভাবনা থাকে। সিদ্ধ ডিম ছাড়াও আপনি ডিম অন্যভাবে খেতে
পারেন। কিন্তু আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে ডিমটা যাতে ভালোভাবে রান্না হয়।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার ৫টি উপকারিতা
ডিম ছাড়াও অন্যান্য খাবারে প্রচুর পরিমাণে কোলিন থাকে। যেমনঃ মাছ মাংস দুধ
ইত্যাদি এসবও পাওয়া যায় কোলিন। তবে ডিমে কোলিন বেশি পরিমাণে থাকে।
গর্ভবতীর খাবারে ডিম রাখা অত্যন্ত জরুরি। গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবার
তালিকা গুলোর মধ্যে ডিম একটি। যা গর্ভবতীর শরীরের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য
করে।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের উপকারিতা
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের উপকারিতা গর্ভাবস্থায় খুবই প্রয়োজন। কেননা
গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের শরীরে ক্যালসিয়াম না থাকলে বাচ্চার শরীরেও
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেবে। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার না খেলে বাচ্চার
শরীরে হার মজবুত হবে না ও দাঁত শক্ত হবে না। তাই শিশুর শরীরের হাড় মজবুত
ও দাঁত শক্ত হতে হলে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতি মায়ের অনেক সময় ব্লাড প্রেসার ও উচ্চ রক্তচাপ
ওঠানামা করে। ফলে গর্ভাবস্থায গর্ভবতীর অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইজন্য
দরকার গর্ভবতী মায়ের গর্ভকালীন সময়ে ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিক রাখা। ব্লাড
প্রেসার স্বাভাবিক রাখার জন্য অবশ্যই গর্ভবতীকে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে
হবে।
অনেক সময় কোন কোন গর্ভবতির গর্ভবতী হওয়ার আগে কোনদিন ব্লাড প্রেসার ও উচ্চ
রক্তচাপ ছিল না। কিন্তু গর্ভবতী হওয়ার পরে এই সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে। এই সময়
ব্লাড প্রেসার উচ্চ রক্তচাপ হলে অন্যান্য রোগ দেখা দিতে পারে। তাই বলা যায়
মা ও শিশুর সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তাই
গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবারের তালিকায় এটি রাখতে হবে।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গুলো হল দুধ, টক দই, কাঠবাদাম, শাকসবজি, ব্রকলি
ইত্যাদি। ক্যালসিয়াম পাওয়ার জন্য আপনি যদি ক্যালসিয়াম জাতীয় ওষুধ খেতে চান
তাহলে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ গর্ভকালীন অবস্থায়
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ধরনের ঔষধ সেবন করা উচিত নয়।
গর্ভাবস্থায় শাকের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় শাকের উপকারিতা বহু গুণে বেশি। গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি
খাবার এর মধ্যে শাক খাওয়া জরুরী। কেননা শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ
ভিটামিন। গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকও গর্ভবতী মাকে তার তিন বেলার খাবার তালিকায়
শাক রাখতে বলেন। শাকে রয়েছে প্রচুর আয়রন। শাক আয়রনের অভাব পূরন করে।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয়
থাকে প্রচুর পরিমাণ আইরন ও ফোলের থাকে। গর্ভাবস্থায় শিশুর যখন মাথার খুলি তৈরি
হয় ব্রেন তৈরি হয় মেরুদন্ড তৈরি হয় এগুলো যাতে ভালোভাবে তৈরি হতে পারে সেই
জন্য শাক অত্যন্ত জরুরি। গর্ব অবস্থায় চিকিৎসকরা গর্ভের সন্তান যাতে ভালোভাবে
বৃদ্ধি পেতে পায় এবং শিশুর বিকাশ যাতে ভালোভাবে হয় এই জন্য শাক খাওয়ার পরামর্শ
বেশি করে দেয়।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলা যদি শাক না খায় তাহলে শিশুর শরীরে ফোলেটের ঘাটতি
দেখা দিবে। এমনকি ফোলেটের অভাবে অনেক সময় শিশুর মাথার খুলে পুরোপুরি ভাবে তৈরি
না হয়ে অল্প পরিমাণের তৈরি হয়ে শিশুর ভূমিষ্ঠ হয়। এবং শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে
কিছু সময় পরে মারা যায়। তাই গর্ভবতীকে তার খাবার তালিকায় অবশ্যই অবশ্যই সব
ধরনের শাক রাখতে হবে। যাতে তার শিশুর পুরোপুরি বিকাশ ঘটে। এবং এই ধরনের
অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনার না ঘটে।
শাঁকে রয়েছে প্রচুর আয়রন। মায়ের শরীরে নতুন রক্ত তৈরি করতে আয়রনের দরকার
হয়। আয়রন এর অভাব হলে মায়ের শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। শিশুর ওজন
কমে যেতে পারে। আয়রনের অভাবে শিশু সময়ের আগে প্রসব হয়ে যেতে।ফলে শিশু বড়
হওয়ার পরও তার নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।এইজন্য গর্ভকালীন অবস্থায় সব
ধরনের খাওয়া প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি জাতীয় খাবারের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি জাতীয় খাবার শরীরের জন্য উপকার। আমাদের শরীর কিছু
ভিটামিন জমিয়ে রাখতে পারে না। সেটা হল ভিটামিন সি। তাই ভিটামিন সি শরীরে জমা
রাখার জন্য ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। গর্ভকালীন অবস্থায় ভিটামিন
সি জাতীয় খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক।
যেহেতু ভিটামিন সি আমাদের শরীর ধরে রাখতে পারেনা তাই গর্ভাবস্থায় গর্ভবতীকে
অবশ্যই তার প্রত্যেক বেলার খাবারে ভিটামিন সি জাতীয় রাখা উচিত।এতে আমাদের শরীরে
ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করবে। ভিটামিন সি বাচ্চার দাঁত দাঁতের মাড়ি হার মজবুত
করতে সাহায্য করে। এইজন্য ভিটামিন সি গর্ভকালীন অবস্থায় খুবই দরকার।
ভিটামিন সি অন্যান্য সময়ের চাইতে গর্ভকালীন সময়ে একজন গর্ভবতীর বেশি প্রয়োজন
হয়। এজন্য ভিটামিন সি আছে এমন খাবার প্রতিবেলায় খেতে হবে। ভিটামিন সি আছে এমন
কিছু খাবার হল টমেটো ফুলকপি বাঁধাকপি ব্রকলি ক্যাপসিকাম করলা কাঁকরোল ইত্যাদি।
শুধু টক জাতীয় খাবার এই যে ভিটামিন সি আছে তা নয়।
সবজি থেকে যদি ভিটামিন সি পেতে চান তাহলে সবজি রান্না করার ক্ষেত্রে অবশ্যই
গর্ভবতীকে খেয়াল রাখতে হবে বেশি তাপে ভিটামিন সি জাতীয় সবজি রান্না করা যাবে
না। কারণ ভিটামিন সি জাতীয় সবজি বেশি তাপে নষ্ট হয়ে যায়। ফল থেকেও ভিটামিন সি
পাওয়া যায় যেমন আমড়া, জাম্বুর, বরই, কমলা, মাল্টা, স্ট্রবেরি ইত্যাদি। এগুলো
থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় ডালের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডালের উপকারিতা হল ডালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও প্রোটিন
রয়েছে। গর্ভকালীন অবস্থায় ডাল গর্ভবতীর প্রোটিন ও আমিষের চাহিদা পূরণ করে।
প্রেগনেন্সির সময় বেশি পরিমাণে প্রোটিনো আমিষের দরকার হয় অন্য সময়ের
তুলনায়। সাধারণত আমরা আমিষ বা প্রোটিন বলতে শুধু দুধ বা মাছকে বুঝিয়ে থাকি।
কিন্তু ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও প্রোটিন।
গর্ভবতী মহিলা গর্ভকালীন সময়ে যদি এই ধরনের বমি বমি ভাব এবং গন্ধ জিনিসটা
বেশি থাকে তাহলে আপনি মাছ মাংস পরিবর্তে মসুর ডাল বেশি পরিমাণে খেতে পারেন।
এতে আপনার শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মিটাবে। কিন্তু এটা ভাববেন না যে আপনি
একেবারেই মাছ-মাংস দূর ডিম এগুলো খাবেন না। প্রোটিন গর্ভের বাচ্চার মাংস পেসি
তৈরি করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বাদাম খাওয়ার উপকারিতা পেতে হলে অবশ্যই গর্ভবতী মহিলাকে সব ধরনের
বাদাম খেতে হবে। বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী
মহিলার জন্য ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাঠবাদামে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর এটি খাবার।
গবেষকরা বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর ১০০ খাবার তালিকা করেছেন। আর এই ১০০ খাবার
তালিকার মধ্যে সবার উপরে পুষ্টিকর খাবার হচ্ছে কাঠবাদাম। কাঠবাদাম প্রচুর
পরিমাণ পুষ্টিকর খাবারের একটি। গর্ভবতী গর্ভাবস্থায় দশটি উপকার খাবারের মধ্যে
একটি রাখতে পারেন। যা গর্ভবতীর খাবারের ভিটামিন যোগাবে।
কাঠ বাদাম ছাড়াও সব ধরনের বাদামে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বাদামে
রয়েছে ক্যালসিয়াম। চিনা বাদাম থেকে ফোলিক অ্যাসিড এবং কোলিন পাওয়া। যা শিশুর
ব্রেন তৈরিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। যায়বাদামের পাশাপাশি আপনি চিয়াসিস মিষ্টি
কুমড়ার বিচি এগুলো খেতে পারেন। এগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন।
গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মাছ আর উপকারিতা হলো মাছ শিশুর শরীরের ক্যালসিয়াম আমিষের ও
প্রোটিনের শূন্যতা দূর করে। গর্ভবতী মাকে তার শরীরে সুস্থতার জন্য এবং শিশু
শরীরে সুস্থতার জন্য মাছ খাওয়া দরকার। গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে কনস্টিপেশন
বেড়ে যায়। যার কারনে ক্যালসিয়াম আমিষ প্রোটিন সব ধরনের পুষ্টিকর খাবারের
প্রয়োজন।
মাছ শিশুর ব্রেন গঠনে কাজ করে। এজন্য গর্ভবতী মহিলাকে সব ধরনের মাছ
গর্ভাবস্থায় খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাকে তার খাবার তালিকায় দুই
দিন সামুদ্রিক মাছ এবং অন্যান্য দিন ছোট মাছ বড় মাছ সব ধরনের মাঝে রাখতে হবে।
সামুদ্রিক মাছের প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। আর আমরা সবাই জানি
ক্যালসিয়াম হারমজবুত করতে সাহায্য করে।
ছোট মাঝে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং ক্যালসিয়াম। গর্ভবতী মায়ের
শরীরে সব ধরনের ভিটামিনেরই দরকার। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ থেকে বাঁচায় এবং আরো
অন্যান্য রোগ থেকে ভিটামিন এ আমাদের রক্ষা করে। তাই ভিটামিন এ পাওয়ার জন্য
অবশ্যই ছোট মাছ খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। ছোট মাছের পাশাপাশি আপনাকে বড় মাজো
রাখতে হবে।
গর্ভাবস্থায় মাংস খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মাংস খাওয়ার উপকারিতা পেতে হলে গর্ভবতীকে পরিমাণ মতো মাংস খাওয়া
জরুরী। কারণ মাংসের মধ্যে আইরন, ফোলেট, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে। গরুর মাংসের প্রচুর পরিমাণ আইরন ফোলেট, জিংক,
ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে।গর্ভবতী পুরো
সপ্তাহের এক থেকে দুই দিন তার খাবারে গরুর মাংস রাখতে পারেন।
গরুর মাংসে যেহেতু প্রায় সব ধরনের ভিটামিন রয়েছে তাই একজন গর্ভবতীকে তার
খাবারের তালিকায় এই মাংস রাখা প্রয়োজন। অনেকে আছেন মুরগির মাংস পছন্দ করেন।
হ্যাঁ আপনি মুরগির মাংস খেতে পারেন। মুরগির মাংসে রয়েছে ভিটামিন বি ও আয়রন।
তাই মুরগির মাংসকেও গর্ভবতী মহিলা তার খাবার তালিকায় রাখতে পারে।
আমরা জানি যত ধরনের পুষ্টিকর খাবার রয়েছে তার মধ্যে মাংসে বেশি পরিমাণে আয়রন
ক্যালসিয়াম রয়েছে। আমরা এটাও জানি আইরন ও ক্যালসিয়াম সাধারণ মানুষের শরীরে
যতটা দরকার তার চেয়ে বেশি দরকার গর্বকালীন মায়ের শরীরে। কারণ এই পুষ্টি
উপাদান গুলো মায়ের শরীরের জন্য এবং শিশুর শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। এই
পুষ্টি উপাদানগুলো শিশুর সঠিক বিকাশে ভূমিকা রাখে।
গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা
গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। খেজুরে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। এছাড়াও খেজুরে রয়েছেন ফুকট্রোজ এবং সুক্রোজ। এটি
শরীরের শক্তি যোগায় এবং রক্ত উৎপাদন করতে সাহায্য করে। যা গর্ব অবস্থায়
খাওয়াটা খুবই জরুরী। এটি গর্ভবতী মহিলার শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
এছাড়াও খেজুরে রয়েছে প্রচুর গ্লুকোজ। গ্লুকোজ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী
শরীরে খুব বেশি পরিমাণে দরকার। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খেজুর খাওয়া জরুরি।
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে শক্তি থাকা দরকার। কারণ শক্তি না থাকলে
সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব হবেনা। খেজুরে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকায় এটি
শক্তি জোগাতে সহযোগিতা করে।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলা যদি প্রত্যেকদিন খেজুর খায় তাহলে প্রসবের সময়
বাড়তি শক্তি যোগান দিতে সমস্যা হয় না। তাই একজন গর্ভবতীকে প্রতিদিন ৬০ থেকে
৮০ গ্রাম খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুরে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড। এই ফ্যাটি এসিড
খুবই উপকারী যার ফলে এই উপাদান প্রসবের সময় সারভাইক্যাল মাসল ফেলিক্সিবল করে
কমনও করে তোলে ফলে প্রসব বেদনা অনেকটাই কম হয়।
গর্ভাবস্থায় মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মিষ্টি আলু খাওয়ার উপকারিতার জুড়ি নেই। আপনি কি জানেন মিষ্টি
আলু খাওয়া গর্ভকালীন অবস্থায় কতটা প্রয়োজনীয়? কারণ মিষ্টি আলোতে আছে বিটা
কেরোটিন সহ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। মিষ্টি আলো শরীরে অনেক সমস্যার সমাধান করে।
তাই গর্ভকালীন অবস্থায় মিষ্টি আলু খাওয়া অনেক জরুরী।
গর্ব অবস্থায় অনেক সময় গর্ভবতী মহিলার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। এই
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রেহাই পেতে হলে খেতে পারেন। মিষ্টি আলুতে শুধু খনিজ পদার্থই
নেই এখানে প্রচুর ফাইবার আছে। আর ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমাধান করে। এছাড়াও
মিষ্টি আলোতে রয়েছে ভিটামিন।ভিটামিন এ শিশুর চোখ ও ত্বকের গঠন এবং রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও মিষ্টি আলুতে রয়েছে শর্করা। মিষ্টি আলুর রক্তে শর্করার মাত্রা বজায়
রাখে এবং শরীরকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে।তাই আমরা বলতে পারি মিষ্টি আলো
কম পুষ্টিকর সবজি নয়। এতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ পুষ্টিকর উপাদান।মিষ্টি আলু
গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবারের অন্যতম।
গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবার সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
আজকে আমরা এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে
আপনাদেরকে জানিয়েছি।গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতীর শরীরের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ও
পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন। কিন্তু অনেকেই জানে না কোন খাবারে কি ধরনের পুষ্টি
উপাদান রয়েছে এবং কতটা স্বাস্থ্যসম্মত। একজন গর্ভবতীর জন্য এটা জানা খুবই
দরকার। গর্ভবতী ও তার শিশুর উভয়ের সঠিক পুষ্টিমান পাওয়ার জন্য এবং শিশুর সঠিক
বিকাশের জন্য প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি সম্পন্ন খাবার বাছাই করা।
আমি আমার এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের ও তার শিশুর বিকাশের কথা
ভেবে দশটি খাবার ও খাবারের পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি গর্ভাবস্থায়
দশটি উপকারি খাবার সম্পর্কে আপনারা সঠিক ধারণা পেয়েছেন।যদি আমার এ পোস্টে থেকে
আপনারা উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করবেন।এবং অন্যকে
দেখার সুযোগ করে দিবেন।
রিজু ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url