গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয়
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের এই পোস্টটি
শুধুমাত্র আপনার জন্য। আপনার পরিবারের যদি কেউ গর্ভবতী থাকে তাহলে তার সুস্থতার
জন্য আমাদের এই পোস্টটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
তাহলে আপনি গর্ব
অবস্থায় একজন গর্ভবতী কিভাবে সুস্থ থাকবে সেই বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। গর্ব
অবস্থায় সুস্থ থাকাটা জরুরী তা না হলে গর্ভবতী নানা সমস্যায় পড়তে পারে। তো
চলুন আজকে গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করি।
সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে প্রয়োজনীয় খাবার
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে খাবারের সতর্কতা
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে পরিচ্ছন্নতা
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে চলাফেরা
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে পোশাকের গুরুত্ব
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে চিকিৎসার গুরুত্ব
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে মানসিক প্রশান্তির গুরুত্ব
- গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম
- লেখকের শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে প্রয়োজনীয় খাবার
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে অবশ্যই গর্ভবতীকে তার প্রয়োজনীয় খাবারগুলো দিকে
নজর দিতে হবে। কারণ একজন গর্ভবতীকে প্রয়োজনীয় খাবার না দিলে বা গর্ভবতী যদি তার
গর্ব অবস্থায় যে যে খাবারগুলো প্রয়োজন সেগুলো না খায় তাহলে তার গর্বের সন্তান
এর পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে না। একটি সুস্থ সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে গর্ব
অবস্থায় একজন গর্ভবতী মাকে তার প্রয়োজনীয় সকল প্রকার পুষ্টিকর খাবার খেতে
হবে।
একজন গর্ভবতী তার গর্ভকালীন সময়ে তার খাবার তালিকায় সবসময় প্রোটিন,
ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, আয়োডিন, মিনারেল ও আইরন যুক্ত খাবার রাখতে হবে।
কারণ এই খাবারগুলো গর্ভবতীর শরীরের সুস্থতার জন্য খুবই দরকার। শুধু সুস্থতায় নয়
এই খাবার গুলোর মাধ্যমে তার বাচ্চার বিকাশে যথেষ্ট সাহায্য করে। একজন গর্ভবতী মা
যখন গর্ভধারণ করে ওই সময় থেকে তার শরীরের যেমন আকৃতির পরিবর্তন হয়।
আর পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় সফেদা খাওয়ার উপকারিতা
তেমনি তার শরীরে নানা সমস্যারও সৃষ্টি হতে পারে। তাই গর্ব অবস্থায় যাতে একজন মা
কোন ভাবে অসুস্থ হয়ে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য তাকে সব সময় পুষ্টিকর
খাবার খেতে হবে। একজন গর্ভবতী নিজেই তার শরীরের সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় মৌসুমী
ফল ভিটামিন ও ভিটামিন সি যুক্ত ফল খাবেন। এছাড়াও বেশি বেশি সবুজ রঙের শাকসবজি
গুলো খাবেন। শাকসবজি থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায়।
ফলমূল ও শাক সবজির পাশাপাশি একজন গর্ভবতী আমিষ ক্যালসিয়াম প্রোটিনের চাহিদা
পূরণের জন্য মাছ-মাংস ডিম দুধ অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে। এই
খাবারগুলোর মাধ্যমে যেমন গর্ভবতী মায়ের শরীরের সকল ঘাটতি পূরণ করেন তেমনি
শিশুর শরীর ও মস্তিষ্ক গঠনেও এই খাবারগুলো যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। তাই গর্ভবতী
মায়ের খাবার তালিকায় এমন খাবার যুক্ত করতে হবে যে খাবার গুলোর মাধ্যমে মা ও
শিশু উভয় সুস্থ থাকে।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে খাবারের সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য যেমন আমাদের পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাবারের
প্রয়োজন। ঠিক তেমনি যে খাবারগুলো আমাদের খাওয়া যাবে না সেই খাবারগুলো সম্পর্কে
সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলার বেশ কিছু খাবার খাওয়া
যাবে যাবে না। কারণ এই খাবারগুলো খেলে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলার বিপদ হতে
পারে।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় দশটি উপকারি খাবার
তাই এমন কোন খাবার খাবেন না যেগুলো আপনার গর্ভবতী মহিলার জন্য সমস্যার কারণ হয়।
তো চলুন জেনে নেই কিসেই খাবারগুলো যেগুলো খাওয়ার সময় গর্ভবতী মহিলাকে সতর্কতা
অবলম্বন করতে হয়।
- গর্ভবতী কাঁচা বা আধা সিদ্ধ ধরনের মাংস খাওয়া যাবে না।
- সস দিয়ে রান্না করা মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- পুড়িয়ে রান্না করা মাছ গর্ভবতীর খাওয়া যাবেনা।
- গর্ভবতীর জন্য সামুদ্রিক মাছ খাওয়া ঠিক নয়।
- কোন প্রকার কাচা ডিম গর্ভবতীর খাওয়া যাবে না।
- কোন ধরনের মেয়াদ উর্ত্তির্ণ খাবার খাওয়া যাবেনা।
- পাস্তরিত ও কাঁচা দুধ খাওয়া যাবেনা। যা গর্ভবতীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
- পাস্তড়িত দুধ থেকে তৈরিকৃত পনির গর্ভবতীর জন্য ক্ষতিকারক।
- টেস্টিং সল্ট খাওয়া যাবে না।
- প্রসেস ফুড, জাংক ফুড, ফাস্ট ফুড খাওয়া যাবে না।
- চা, কফি, ড্রিঙ্কস জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।
- যে কোনো ফল না ধুয়ে খাওয়া যাবে না।
তোর প্রিয় গ্রাহক আপনার পরিবারের গর্ভবতী মায়ের জন্য এই ধরনের খাবার থেকে তাকে
বিরত থাকতে বলুন। এবং আপনিও সচেতন হন যাতে সে ভুলেও এই ধরনের খাবারগুলো না খায়।
কারণ এই ধরনের খাবারগুলো তার স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি তার বাচ্চার
স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। তাই এই ধরনের খাবারের আগে অবশ্যই সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে ঘুমের বিকল্প কিছু হতে পারে না। গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকরা
গর্ভবতীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের কথা বলে থাকেন। কারণ এই সময় গর্ভবতী মহিলার এ
সময় প্রচুর বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ে। আর এই বিশ্রামের জন্য সবচাইতে প্রয়োজন
যথেষ্ট ঘুম। ঘুম শরীরের বিশ্রাম যোগায় এবং মাইন্ড ফ্রেশ করে। গর্ভবতী মহিলা যদি
আপসেট থাকে তাহলে সে পর্যাপ্ত ঘুম দিলে তার মাইন্ড ফ্রেশ হবে।
চলুন এবার জেনে নেই
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে একজন মায়ের কি পরিমান ঘুম দরকারঃ
- একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য রাতের বেলায় কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমের দরকার।
- দিনেরদিনের বেলায় একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য ১ থেকে ২ ঘন্টা ঘুম দেওয়া জরুরী।
- যদি কোন গর্ভবতী অতিরিক্ত দুর্বল হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে তিনি দিনে আরও বেশি ঘুমাতে পারেন।
- এবং ঘুমের জন্য আপনি সোজা হয়ে না শুয়ে বাম কাত হয়ে শুনেন। এটি গবেষকরা বলেছেন।
একজন গর্ভবতী যদি প্রতিদিন এই নিয়ম ফলো করে ঘুমান তাহলে সে অনেকটা সুস্থ থাকবে।
এছাড়াও আপনার যদি এ ব্যাপারে আরো বেশি ভালোভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি
চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন। যেভাবে আপনাকে বলবে আপনি সেটিও ফলো করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয়ের মধ্যে ঘুম অন্যতম।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে পরিছন্নতা
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে গর্ভবতীকে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন মনকে প্রফুল্ল রাখে। আর মন প্রফুল্ল থাকলে শরীর ভালো থাকে।
গর্ভবতী মহিলা যেভাবে শরীরকে সুস্থ রাখতে পরিচ্ছন্ন থাকতে পারে তা নিম্নের তুলে
ধরা হলোঃ
- গর্ভবতী প্রতিদিন নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখতে দিনে দুইবার ব্রাশ করতে হবে।
- গর্ভবতী প্রতিদিন গোসলের সময় সাবান পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।
- গর্ভবতীর যদি ঠান্ডা লাগার সমস্যা থাকে তাহলে তিনি হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিতে পারেন।
- গর্ভবতী যে জায়গায় গোসল করবে সেই জায়গা যেন অবশ্যই পরিষ্কার থাকে। সেই জায়গা কোনভাবেই পিচ্ছিল হওয়া যাবে না।
- গর্ভবতী মহিলা গোসলের সময় গোসলের পানিতে সামান্য পরিমাণ স্যাভলন মিশিয়ে গোসল করতে পারেন। এতে শরীরের কোন ব্যাকটেরিয়া থাকলে সেটি দূর হয়ে যাবে।
- গর্ভবতী মহিলা তার কাপড়-চোপড় গোসলের সময় স্যাভলন পানি মিশিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এতেও ব্যাকটেরিয়া মরে যাবে।
- গর্ভবতী মহিলার কাপড়চোপড় রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। রোদে কাপড় শুকিয়ে নিলে কাপড়ের যদি কোন ব্যাকটেরিয়া থাকে তাহলে সেটি ধ্বংস হয়ে যাবে।
- গর্ভবতীকে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বিছানায় ঘুমাতে হবে।
- গর্ভবতী মহিলা খাবার আগে ওপরে ভালো করে সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে।
আপনি যদি আপনার পরিবারের গর্ভবতী মহিলার যত্ন নিতে চান তাহলে উপরের উল্লেখ করা
বিষয়গুলো প্রতিদিন মেনে চলুন। তাহলে গর্ভবতী মহিলা সুস্থ থাকবে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয়ের মধ্যে আরেকটি
গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে চলাফেরা
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতেন গর্ভবতীকে নিজের চলাফেরার প্রতি নজর রাখতে হবে। তার
চলাফেরা সাবধানে করতে হবে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী এবং তার শিশু উভয় সব সময়
ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। তাই তাকে তার চলাফেরার মধ্যে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
কিভাবে সাবধানতা অবলম্বন করবে সেই সম্পর্কে চলুন আমরা জানিঃ
- গর্ভবতী মহিলা তার গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস এবং শেষ তিন মাস অতি সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। এ সময় অতিরিক্ত জার্নি করা যাবে না।
- গর্ভবতী মহিলা একটানা অনেক সময় পর্যন্ত বসে থাকা যাবে না।
- এবং গর্ভবতী মহিলার একটানা অনেক সময় পর্যন্ত দাঁড়িয়েও থাকা যাবে না।
- গর্ভবতী মহিলার অতিরিক্ত হেলে কোন কাজ করা যাবে না।
- গর্ভবতী মহিলার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
- তার চলাফেরার জন্য বেশি উঁচু জুতা ব্যবহার করা যাবে না।
- গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থায় কোনভাবে ভারী জিনিস ওঠানামা করানো যাবে না।
- গর্ভবতী মহিলার গোসলের সময় গোসল করার যাবে না।
- এমন কোন জায়গায় চলাফেরা করা যাবে না যেখানে হাঁটাচলা করতে গর্ভবতী যেকোনো সময় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
গর্ভবতীকে সুস্থ থাকতে অবশ্যই তার চলাফেরা উপরের নিয়ম গুলো অনুযায়ী মানা দরকার।
এইভাবে যদি গর্ভবতী চলাফেরা করে তাহলে তার গর্ব চলাকালীন অবস্থায় সে কোন প্রকার
ঝুঁকের সম্মুখীন হবে না। এটি গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয়গুলোর মধ্যে
একটি।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে পোশাকের গুরুত্ব
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে পোশাকের গুরুত্ব অত্যধিক। কারণ এই সময় একজন গর্ভবতীর
শরীরে আকৃতি অন্যান্য মহিলার চাইতে অন্যরকম। ৮-১০ টা সুস্থ স্বাভাবিক মহিলার
চাইতে গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভ অবস্থায় তার পোশাকের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ
এই সময় তারা তার সুস্থ থাকাটাই বেশি জরুরী। গর্ভবতী যে ধরনের পোশাক পড়বেঃ
- গর্ভবতীর পোশাক হবে ঢিলেঢালা। যাতে তার পোশাকটি পড়তে ও খুলতে কষ্ট না হয়।
- গর্ভবতীর পোশাকটি হবে আরামদায়ক। যাতে সে পোশাকটি পড়ে আরাম অনুভব করে।
- গর্ভবতী এমন পোশাক পড়বে যেটি পড়ে সে কমপোট ফিল কর।
- গর্ভবতী মহিলার কোনভাবে টাইট ফিটিং কাপড় পড়া যাবে না।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে চিকিৎসার গুরুত্ব
গর্ব অবস্থায় সুস্থ থাকতে নিজের কথার পাশাপাশি চিকিৎসার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলার কমপক্ষে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দু থেকে তিনবার টেস্ট
করিয়ে নেওয়া দরকার। আপনি যদি গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের কাছে
নিয়ে যান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভবতীর মহিলার জন্য প্রয়োজনে
টেস্টগুলো করিয়ে নেন তাহলে তার শরীরের কন্ডিশন কি সেটি বোঝা যাবে।
এবং ডাক্তারের কাছ থেকে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নেয়া যাবে। এতে
করে গর্ভবতী এবং গর্ভবতী শিশুর ঝুঁকের হাত থেকে বেঁচে যাবে। গর্ভবতী মহিলার অনেক
সময় অনেক বেশি ওজন বেড়ে যায়। আবার অনেক গর্ভবতীর ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ,
অতিরিক্ত শরীর দুর্বলতা, জ্বর, মাথা ব্যথা, ঠান্ডা ইত্যাদি হতে থাকে। এই জন্য
আপনি গর্ভবতীকে নিজের মন মত মেডিসিন না খাইয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী
মেডিসিন খাওয়ান।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স এর উপকারিতা
ডাক্তার কি মেডিসিন খেতে বলে বা আদোও মেডিসিন তার জন্য কতটা যৌক্তিক উভয়
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জেনে নিয়ে তারপর গর্ববতী ট্রিটমেন্ট করবেন।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতীকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনভাবেই কোন ধরনের হাতুড়ি
চিকিৎসা দিবেন না। এতে গর্ভবতী ও তার বাচ্চা উভয়ের বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা হতে
পারে। তাই গর্ব কালীন অবস্থায় গর্ভবতীর স্বাস্থ্য সেবার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী সব ধরনের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকবেন।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে মানসিক প্রশান্তির গুরুত্ব
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলার মানসিক প্রশান্তির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
কেননা এই সময় গর্ভবতী মহিলা তার শরীরের নানা হরমোনের পরিবর্তন আসায় তাদের
মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিশেষভাবে প্রভাব ফেলে। গর্ভকালীন অবস্থায় একজন গর্ভবতী
সব সময় তার শিশুর ভালো-মন্দ এবং গর্ভবতী মহিলা তার নিজের শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে
সবসময় দুশ্চিন্তায় করেন।
অনেক সময় এতটা দুশ্চিন্তা বেড়ে যায় যে সে হতাশায় ভোগে। এমনকি এই হতাশার কারণে
তার শারীরিক অবনতি দেখা দেয়। যা কোনোভাবেই গর্ব অবস্থায় কাম্য নয়।আপনি যদি গর্ব
অবস্থায় গর্ভবতীকে চান তাহলে তার মানসিক প্রশান্তির জন্য তার সাথে সময় কাটাতে
পারেন। গর্ভবতীর কি ধরনের সমস্যা হচ্ছে তার কি ইচ্ছে করছে বা সে কি করতে পছন্দ
করছে সেই বিষয়গুলো আপনি খেয়াল করেন এবং তাকে সেই জিনিসগুলো দেয়ার চেষ্টা করেন।
আপনি গর্ভবতীর মানসিক প্রশান্তির জন্য তাকে বেশি বেশি ধর্মচর্চা করতে বলবেন এতে
তার মানসিক প্রশান্তি আসতে পারে। আপনি তাকে তার মানসিক প্রশান্তির জন্য বিভিন্ন
ধরনের গল্পের বই বা গল্প করে তার সাথে সময় কাটাতে পারেন। এটি গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয়ের মধ্যে আরেকটি বিশেষ মাধ্যম। এতে করে তার দুশ্চিন্তা
কমবে এবং তার মানসিক প্রশান্তি আসা শুরু করবেন।
গর্ভাবস্থায় আপনি কখনো গর্ভবতীকে অতিরিক্ত চাপের কাজ বা অতিরিক্ত মানসিক চাপ হবে
এমন কোন কথা বলবেন না।তাকে সব সময় মাইন্ড ফ্রেশ রাখার চেষ্টা করবেন। গর্ব
অবস্থায় গর্ভবতীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কাজ করবেন না। গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার
নানা বিষয়ের মধ্যে মানসিক প্রশান্তিটা খুবই খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা আপনাকে সব সময়
খেয়াল রাখতে হবে। মোট কথা আপনাকে তার প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকবেন নিয়মিত ব্যায়ামে অভ্যস্ত হতে হবে গর্ভবতী মহিলাকে।
বন্ধুরা আমরা অনেকেই মনে করি গর্ব অবস্থায় ব্যয়াম করা যাবে না। আমাদের সাধারণ
মাথায় এটাই আসে যে গর্ব অবস্থায় যেহেতু একজন মা তার শরীরে তার শিশুকে নিয়ে
চলাফেরা করে সেহেতু তার কোনোভাবেই ব্যায়াম করা যাবে না। এটা আমাদের একটা ভ্রান্ত
ধারণা। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী একজন গর্ভবতী মহিলা সুস্থ স্বাভাবিক মহিলার মত
যতটা প্রয়োজন ব্যায়াম করতে পারে।
কিন্তু হ্যাঁ এই ব্যায়ামটা গর্ভবতী মহিলাকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করতে
হবে। কেননা চিকিৎসক ভালোভাবে বলতে পারবে একজন গর্ভবতী মহিলাকে কিভাবে ব্যায়াম
করতে হবে তার বাচ্চার জন্য এবং তার জন্য কতটা ব্যায়াম করা প্রয়োজন। এছাড়াও
একজন চিকিৎসক গর্ভবতী মহিলাকে ব্যায়াম করার পাশাপাশি দিনে দুবার হাঁটার পরামর্শ
দেন। যে গর্ভবতী মহিলা একটু দুর্বল সে যদি ব্যায়াম না করতে পারে তাহলে সেদিনে
দুবার হাঁটতে পারেন।
তিনি অবশ্যই সকালে আধাঘন্টা বিকেলে আধা ঘন্টা হাটবেন। এই হাঁটার মাধ্যমে তার
ব্যায়ামের কাজ হয়ে যাবে। আর যে গর্ভবতী মহিলারা শারীরিক দিক থেকে যথেষ্ট সুস্থ
তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যে ধরনের ব্যায়াম করতে বলে সেই ধরনের ব্যায়াম
করবেন এবং নিয়মিত দিনের দুইবার হাঁটবেন। ফলে গর্ভবতী মহিলার শরীর ভালো থাকবে।
লেখকের শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয় একজন গর্ভবতী নারীকে। একজন
গর্ভবতী তার গর্ভের সন্তানকে সুস্থ ভাবে জন্মদেয়ার ক্ষেত্রে তার শারীরিকভাবে
সুস্থ থাকাটা খুবই জরুরি এবং অপরিহার্য। আজকে আমি আমার এই পোস্টটিতে একজন গর্ভবতী
মহিলার গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার নানা বিষয় সম্পর্কে তুলে ধরেছি। একজন গর্ভবতী
মহিলা গর্ভাবস্থায় কি ধরনের খাবার খাবে, কি ধরনের পোশাক পরবে, কিভাবে চলাফেরা
করবে।
এবং গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থায় কি করা যাবে না বা ক্ষতিকর সেই সমস্ত বিষয়
আপনাদের সাথে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করছি আমার এই পোস্টটি থেকে আপনি
গর্ভবতীর সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জানতে পেরেছেন। আমার পোস্টটি
ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার প্রিয় বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। আপনি যদি এইরকম
স্বাস্থ্য বিষয়ক কোন কিছু জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাকে কমেন্ট করে জানাবেন আমি
চেষ্টা করব আপনাদের উপযুক্ত তথ্য দিতে। ধন্যবাদ।
রিজু ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url