কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা
কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা সমূহ নিয়ে আজকের এই
আর্টিকেলটি। আমরা সবাই জানি কালোজিরা একটি মহা ঔষধ। কালোজিরা কে সব রোগের
মহা ঔষধ বলা হয়। আমাদের নবী করীম হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কালোজিরার গুনাগুন
সম্পর্কে বলেছেন এবং আমাদেরকে ব্যবহার করতে বলেছেন। কালোজিরা মৃত্যু ছাড়া
সব রোগের প্রতিশোধক। আজকে চলুন আমরা কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা
সম্পর্কে জানব।
সূচিপত্রঃ কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা সমূহ
- কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন
- কালোজিরার ক্ষতিকারক দিক ও সতর্কতা সমূহ
- কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও সময়
- ওজন কমাতে কালোজিরার তেল
- কালোজিরা এবং মধুর উপকারিতা
- কালোজিরা তেলের ব্যবহার ও উপকারিতা
- চুলের যত্নে মেথি ও কালোজিরা
- কালোজিরার সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর পর্ব
- লেখক এর শেষ মন্তব্য
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, তাহলে চলুন এই
সম্পর্কে জানা যাক। কালোজিরা আপনি আপনি সবাই কমবেশি খেয়ে থাকি। কালোজিরা
উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের প্রায় সবারই জানা আছে। তবে কিভাবে খাবেন সে সম্পর্কে
সবাই অবগত নয়। কালোজিরা আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। তবে এই খাওয়ার মধ্যে
কিছু নিয়ম রয়েছে যেটা অবলম্বন করে খেলে আপনি এটি থেকে অনেক বেশি
উপকারিতা পাবেন।
যা আপনার শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখবে। কালোজিরা অনেকেই আমরা চিবিয়ে খাই।
কালোজিরা চিবিয়ে খেলে আসলেই কি কালোজিরা থেকে আমরা উপকারিতা পাব? এটা অনেকেরই
প্রশ্ন। হ্যাঁ বন্ধুরা কালোজিরা চিবিয়ে খেলেও এটি থেকে আপনি উপকারিতা পাবেন। তবে
আরেকটি কথা মনে রাখতে হবে আপনি কালোজিরা চিবিয়ে খান কিন্তু এটি পরিমাণ মতো খান।
তবেই আপনি কালোজিরা থেকে প্রয়োজনীয় উপকারিতা গুলো পাবেন।
কালোজিরা এক ধরনের সিডস তাই এটির আপনি প্রতিদিন না খেয়ে সপ্তাহে দুই থেকে
তিন দিন চিবিয়ে খান। এবং আপনি এটি হাফ চামচের বেশি চিবিয়ে খাবেন
না। কারণ আপনি যদি প্রত্যেকদিন কালোজিরা চিবিয়ে খান তাহলে আপনার কিডনির সমস্যা
হতে পারে। তাই আপনি প্রত্যেকদিন না খেয়ে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন হাফ চামচ
করে দিনে দুইবার কালোজিরা চিবিয়ে খাবেন। এতে করে আপনার শরীরের অনেক
উপকারিতা পাবেন।
কালোজিরার ৩৭ টি ওষুধি গুনাগুন
কালোজিরা ৩৭ টি ওষুধি গুনাগুন সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো। কালোজিরা থেকে পাওয়া এই
ওষুধি গুণাগুণ আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। এবং এটি আমাদের শরীরের সকল রোগের
প্রতিশোধক। কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন এতটাই বেশি যে এটাকে অন্যান্য রোগের মহা ঔষধ
বলে আখ্যায়িত করা হয়েছ। নিম্নে কালোজিরার ৩৭ টি ঔষধি গুনাগুন আলোচনা করা
হলোঃ
- সর্দি কাশি সারতে কালোজিরা ভূমিকা অতুলনীয়। প্রচুর পরিমাণে সর্দি লাগলে কাঁচা কালোজিরা কাঁচা পেঁয়াজ এবং সরিষার তেল একসাথে চিবিয়ে খেলে এ থেকে মুক্তি লাভ হয়। এছাড়া আপনি এই তিনটি উপকরণ একসাথে হালকা তেলে কুসুম কুসুম গরম তেলে খেলে যথেষ্ট উপকার পাবেন।
- কালোজিরার তেল চর্মরোগ সারতে অনেক উপকারী। চর্মরোগ হলে কালোজিরা তেল এর সাথে হলুদ বেটে শেঠের রস এই তেলের সাথে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালে খুব তাড়াতাড়ি চরম রোগ সেরে যায়।
- যারা হার্টের রোগী তাদের ক্ষেত্রে কালোজিরার তেল খুবই উপকারী। কালোজিরা তেল হার্টের রোগী তার সারা বুকে মালিশ করলে এটি থেকে আরাম অনুভব করা যায়।
- কালোজিরা সেবনের ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আসে। এজন্য যাদের ব্লাড প্রেসার রয়েছে তারা বেশি বেশি কালোজিরা সেবন করুন।
- ডায়াবেটিস যাদের আছে তাদের জন্য এটি মহা ঔষধ। কেননা এটির ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে সুগার লেভেল কে নামিয়ে আনে। শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে।
- ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কালোজিরার তেল এবং কালোজিরা খুবই উপকারী। কালোজিরা তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনি থাকবেন সুস্থ এবং আপনার তো থাকবে সতেজ।
- কালোজিরা সরণ শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যাদের মনে রাখার ধারণ ক্ষমতা কম তারা নিয়মিত কালোজিরা সেবন করতে পারেন।
- মধু ও কালোজিরার তেল একসাথে সেবন করলে অতি তাড়াতাড়ি মাথাব্যথা ভালো হয়ে যায়। মাথা ব্যাথার এটি একটি মহা ঔষধ।
- কালোজিরার তেল বাতের ব্যথা দূর করে দিতে সব চাইতে কার্যকরী একটি ঔষধ। যারা বাতের ব্যথায় ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে তারা কালোজিরা তেল নিয়মিত মালিশ করুন এতে করে ভাতের ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
- যারা দীর্ঘদিন পাইলস রোগে ভুগছেন তাদের জন্য কালোজিরা খুবই উপকারী। মাখন তিলের তেল এবং কালোজিরা তেল দিনে দুইবার সেবন করুন এটি নিয়মিত করতে থাকুন তাহলে আপনার পাইলস ভালো হয়ে যাবে।
- কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে দাঁতের ব্যাথা দূর হয়।
- ত্বকের সাথে সাথে চুলের চুলের যাবতীয় সমস্যা সমাধানের কালোজিরা থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
- শরীরের সকল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কালোজিরা তেল ও কালোজিরা বিশেষভাবে কাজ করে।
- দেহে যদি কোন জায়গায় আঁচিল থাকে তাহলে সেই আঁচিল উঠে ফেলার জন্য কালোজিরার তেল অনেক কার্যকারী।
- লিভারের সুরক্ষায় কালোজিরা ব্যবহার করা উত্তম। এটি ব্যবহার করলে লিভারের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়।
- আপনি যদি আপনার শরীরকে বা আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান তাহলে প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ করে কালোজিরা সেবন করুন।
- ছোট বাচ্চাদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে কালোজিরার তেল খুবই উপকারী। কিন্তু দুই বছরের উপরে যাদের বয়স সেই বাচ্চাগুলোদের ক্ষেত্রে কালোজিরার তেল ব্যবহার করা যাবে।
- যে মায়েরা বাচ্চাদের দুধদান করে তাদের যদি বুকের দুধ কম হয় তাহলে দুধ বৃদ্ধিতে প্রতিদিন কালোজিরা ও মধু খেলে বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে।
- মহিলাদের অনিয়মিত মাসিক হলে সে ক্ষেত্রে আপনি কালোজিরা খেতে পারেন। কালোজিরা সাথে আতপ চাল হলুদের রস এবং মধু একসাথে মিশিয়ে খেল অনিয়মিত মাসিক সেরে যায়।
- যাদের ডাস্ট এলার্জি রয়েছে তাদের জন্য কালোজিরা খুবই উপকারী।
- যাদের অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কালোজিরা খুবই উপকারী।
- শ্বাসকষ্ট সারতে কালোজিরার ব্যবহার অন্যতম। শ্বাসকষ্ট বেশি হলে কালোজিরা তেল সেবন করতে পারেন।
- ব্রণ কার্টিজ রোগীদের জন্য কালোজিরা খুবই উপকারী। কালোজিরা সেবনের ফলে ব্রণ কাটিস রোগ ভালো হয়ে যায়।
- কালোজিরা সেবনের ফলে হজমের সমস্যা সমাধান হয়।
- কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে এলার্জিটিক রাইনাইটিস দূর করতে সাহায্য করে।
- কালোজিরা তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে চুল পড়া বন্ধ হয়।
- কালোজিরা তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
- কালোজিরা তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলের পুষ্টি যোগায় ও গোরা শক্ত হয় এবং চুলকে বৃদ্ধি করে।
- কালোজিরা তেল খাওয়ার মাধ্যমে যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তাদের মাইগ্রেনের সমস্যার সমাধান হয়।
- কালোজিরা তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে যাতে চোখের ব্যথা হয় সেক্ষেত্রের চোখের চারপাশে মালিশ করলে চোখের ব্যথা কমে যায়।
- নিয়মিত কালোজিরা খেলে কিডনির পাথর জনিত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ডায়রিয়া হলে কালোজিরা সেবন করতে পারেন এতে করে ডায়রিয়া ভালো হয়।
- পারকিনস রোগ সারতে কালোজিরা সেবন করা উত্তম। এতে এই রোগ ভালো হয়।
- রক্তের ক্ষতিকারক জীবাণু দূর করতে কালোজিরা সেবন করা উচিত। এটি রক্তের মধ্যে ক্ষতিকারক জীবাণু দূর করে।
- ক্যান্সারে প্রতিশোধক হচ্ছে কালোজিরা। আপনি রোজ কালোজিরা সেবন করুন ক্যান্সার থেকে বাঁচুন।
- মুখের স্বাদ বাড়াতে বা রুচি বাড়াতে এটি খুবই কার্যকরী। যাদের রুচি নেই তারা কালোজিরা রোজ খান তাহলে আপনার রুচি বাড়বে।
- শরীরের সকল প্রকার ব্যথায় কালোজিরা তেল মালিশ খুবই উপকারী। আপনার শরীরের যে যে জায়গায় ব্যথা রয়েছে সেখানে সেখানে কালোজিরার তেল ব্যবহার করলে এ ব্যথা থেকে আপনি আরাম পাবেন।
কালোজিরার ক্ষতিকারক দিক ও সতর্কতা সমূহ
কালোজিরা ক্ষতিকারক দিক ও সতর্কতা সমূহ সম্পর্কে আপনারা কি জানেন? হয়তোবা জানেন
না। আমরা সবাই কালোজিরার গুন বা উপকারিতা শুধু জেনে গেছি। কিন্তু কালোজিরার
যে ক্ষতিকারক দিক ও এর সতর্কতা রয়েছে এটা আমরা সবাই জানি না। তাই কালোজিরার
ক্ষতিকারক দিক ও সতর্কতা সমূহ সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকতে হবে এবং জানতে
হবে। নিম্ন কালোজিরার ক্ষতিকারক দিক ও সতর্কতা সমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
- যাদের অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তাদের কালোজিরা খাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা থাকলে কালোজিরা খেলে তাদের গ্যাস ফর্ম করতে পারে।
- যাদের পেট ফাঁপা এবং বমি বমি ভাব হয় তারা কালোজিরা খেতে পারবেন না। এতে করে তাদের আরো বেশি সমস্যা হবে।
- গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে কালোজিরা ও কালোজিরা তেল খাওয়া যাবেনা।
- এতে মা ও সন্তানের উভয় সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন। তবে গর্ভবতী শরীরে কালোজিরার তেল মালিশ করতে পারেন এতে কোন সমস্যা নেই।
- দুই বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের সেবনের ক্ষেত্রে ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুবই ক্ষতিকারক। দুই বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের এটি ব্যবহার ও খাওয়া কোনটাই যাবে না।
- যাদের স্কিনে এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা তাদের স্কিনের কালোজিরার তেল ব্যবহার করতে পারবেন না।
- কালোজিরা ব্লেডিং ডিজঅর্ডারের জন্য অপকারী ও ক্ষতিকর।
- যাদের লো ব্লাড সুগার তাদের ক্ষেত্রে কালোজিরা ক্ষতিকর।
- লো ব্লাড প্রেসারের ক্ষেত্র কালোজিরা সেবন করা ক্ষতিকারক।
তো বন্ধুরা কালোজিরার যেমন উপকারিতা রয়েছে তার মানে অপকারিতা ও রয়েছে। আমার এই
আর্টিকেলটি থেকে আপনি কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা সমূহ উভয় জানানো
হলো আপনাদের সুবিধার্থে। আপনি কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা সমূহ
সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিতে পারবেন।
কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও সময়
কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও সময় নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। অনেকের বলে
থাকে কালোজিরা সকালে খেলে খুব উপকার আবার অনেকে বলে রাতে খেলে খুব উপকার। কিন্তু
এটা কি আসলেই সত্যি। তো বন্ধুরা, এই সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে আমি বলব
কালোজিরা খাওয়ার কোন স্পেসিফিক কোন সময় নেই আপনি যেকোনো সময় কালোজিরা খেতে
পারেন। এবং যে কোন নিয়মেই খেতে পারেন।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়মঃ
কালোজিরা এমন নিয়ে একটি ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন খাবার যা শরীরের যেকোনো রোগ
নিরাময় সহায়ক হিসেবে কাজ করে। ডাক্তারি গবেষণায় ডাক্তাররা এটি সব ধরনের ভাবে
খাওয়ার কথা বলেছেন। আমাদের দেশের কালোজিরা বেশিরভাগ ভর্তা বানিয়ে খেতে পছন্দ
করে। আপনি এটি ভর্তা করেও খেতে পারেন। আবার আপনি এটি সবজি তে বাগার দিয়েও খেতে
পারেন। ডালের মধ্যে বাগার দিয়েও খেতে পারেন। এমনি হাতের মধ্যে টেলে নিও খেতে
পারেন। এতে করে কোন সমস্যা নেই।
আরো পড়ুনঃ
সজনে পাতা খাওয়ার নিয়ম
তবে আপনি হাতে টেলে নিয়ে যদি খান তাহলে প্রতিদিন না খেয়ে সপ্তাহে দুই থেকে তিন
দিন খান। এবং খুব সামান্য পরিমাণ খান এতেই আপনি উপকার পাবেন। আর কালোজিরা তেলের
ক্ষেত্রে আপনি কালোজিরা তেল চামচে করে এমনি খেতে পারেন আর যদি মনে করেন অন্যান্য
জিনিসের সাথে মিশিয়ে খাবেন খেতে পারেন এটা কোন বাধা নেই। কালোজিরা আপনি যে কোন
খাবারের সাথে মিক্স করলে সেই খাবারের টেস্ট আরো বেশি বেড়ে যায়।
ওজন কমাতে কালোজিরার তেল
ওজন কমাতে কালোজিরার তেলের তুলনাই হয় না। এর প্রমাণ মিলাতে গিয়ে গবেষকরা অনেক
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছে যে কালোজিরার তেল ওজন কমাতে ব্যাপকভাবে কাজ করে।
চিকিৎসকরা ডায়েট করার জন্য ডায়েটের চার্টের সাথে সাথে কালোজিরার তেল খাওয়ার
পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তো বন্ধুরা আপনাদের যদি অতিরিক্ত ওজন নিয়ে টেনশনে থাকেন
তাহলে আর দেরি না করে কালোজিরা তেল সেবন করুন।
কালোজিরা তেল আপনাকে অতি দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করবে এবং আপনার শরীর ও ত্বককে
রাখবে সতেজ ও উজ্জ্বল। কালোজিরা তেল আপনাকে কোনরকম সাইড ইফেক্ট ছাড়াই আপনার
শরীরের সকল প্রকার ফ্যাট কমাতে সাহায্য করবে। এটি আপনার শরীরে ওজন কমানোর সাথে
সাথে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুণাগুণ ও সর্তকতা
মধ্যে এটি একটি অন্যতম গুন।
কালোজিরা ও মধুর উপকারিতা
কালোজিরা ও মধুর উপকারিতা সম্পর্কে প্রাচীনকাল থেকে আমরা শুনে আসছি। যোগ
কালোজিরাতে যেমন ১০০ ভাগ নিউট্রিশন রয়েছে ঠিক মধু ১০০ ভাগ নিউট্রিশন রয়েছে।
দুইটির মধ্যে ১০০ ভাগ নিউট্রেশন থাকার কারণে এই দুটিকে সকল রোগের মহা ঔষধ বলা
হয়। আমরা সকলেই জানি এ দুটি খাবার সম্পর্কে। কিন্তু আমরা এটা জানি না কালোজিরা ও
মধু এই দুইটি একসাথে খেলে কি উপকারিতা পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ
ডিমের পুষ্টিগুণ সমূহ আলোচনা
আপনি কি জানেন এ সম্পর্কে, তো বন্ধুরা চলুন এবার এই সম্পর্কে আমরা জানব। কালোজিরা
হলো এন্টিবায়োটিক ও এন্টিসেপটিক যার শরীরের সকল ব্যাকটেরিয়া সরাসরি দূর করতে
পারে। এবং মধুতে রয়েছে ৪৫ এর বেশি পুষ্টি উপাদান। মধুর এন্টি মাইক্রোবিয়াল ও
এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান দেহকে যেকোনো সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।এই দুটি শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অধিকারে বাড়িয়ে দেয়।
কালোজিরা ও মধু আপনি যদি সঠিক নিয়মে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের সকল রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতার এক শক্তিশালী দেয়াল তৈরি হবে। যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।
কালোজিরা এবং মধু উভয় অতিরিক্ত ঠান্ডা সর্দি কাশিম ছাড়তে খুবই উপকারী। এক দুটি
একসাথে করে খেলে নিয়ম করে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সতেজ রাখবে এবং আপনাকে
প্রতিনিয়ত এনার্জেটিক ও সুস্থ রাখবে। আপনি প্রতিদিন সকালে হাফ চামচ কালোজিরা এবং
এক চামচ মধু খেতে পারেন।
আপনি যদি কালোজিরা না খান কালোজিরা তেল খেতে চান তাতেও কোন সমস্যা নেই। কালোজিরা
তেল এবং মধু একসাথে নিয়ম করে খাবেন তাহলে আপনার শরীরের সকল রোগ সেরে যাবে। তবে
যাদের শরীরে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা রয়েছে জয়েন্টে জয়েন্টে তারা প্রতিদিন সকালে
এই দুটি মিশ্রণ খাওয়ার সাথে সাথে রাত্রেও কালোজিরা তেল মালিশ করবেন এতে বেশি
উপকারিতা পাবেন। এটি কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা মধ্য অন্তর্ভুক্ত।
কালোজিরা তেলের ব্যবহার ও উপকারিতা
কালোজিরা তেলের ব্যবহার ও উপকারিতা আমরা কে না জানি।কালোজিরা তেলের ব্যবহারের
মাধ্যমে সকল বাতের ব্যথা ও জয়েন্টের ব্যথার উপকারিতা পাওয়া যায়। এছাড়াও
কালোজিরা তেলের ব্যবহারের মাধ্যমে চুলের গোড়া শক্ত হয়। চুল বড় করতে এইটেল
ব্যবহার করা হয়। কালোজিরা তেলের ব্যবহারের মাধ্যমে যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা
রয়েছে তারা নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করলে মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে সমাধান
পায়।
কালোজিরার তেল ওজন কমাতে সহায়তা করে। কালোজিরা তেল মাথা ব্যাথা দূর করতে সাহায্য
করে। কালোজিরার তেল এমন কোন সমস্যা নাই যেখানে ব্যবহার করা হয় না। তাই কালোজিরার
তেলের ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে কোন দুশ্চিন্তা নেই। আপনারা চিন্তা মুক্ত ভাবে
কালোজিরার তেল ব্যবহার করতে পারেন। সবচাইতে ভালোহবে কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন
ও সর্তকতা ভালোভাবে জানুন এরপর কিনুন।
বর্তমানে কালোজিরার তেল বিভিন্ন শপে পাওয়া যাচ্ছে। আপনারা চাইলে সে সব থেকে
কিনতে পারেন। কালোজিরা তেলের দাম খুব একটা বেশি না এটি মানুষের হাতের নাগালে
রয়েছে তাই এটি কিনতে খুব একটা খরচহয় না। এছাড়া আপনি যদি এই তেল বাড়িতে নিজে
নিজেই তৈরি করতে চান তাহলে তৈরি করে নিতে পারেন। এতে করে আপনি খাঁটি কালো জিরার
তেল ঘরে বসে তৈরি করতে পারবেন।
চুলের যত্নে মেথি ও কালোজিরা
চুলের যত্নে মেথি ও কালোজিরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি মেথিতে রয়েছে প্রোটিন
ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা চুলের পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে। এবং কালোজিরাতে
রয়েছেন ১০০ রকমের পুষ্টি উপাদান এটিও চুলের পুষ্টি ও চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর
করতে সাহায্য করে। এই দুইটি যদি একসাথে ব্যবহার করা যায় তাহলে চুলের সমস্যা আরও
দ্রুত সমাধান হবে।
হেয়ার প্যাকঃ
একটি বাটিতে এক কাপ টক দই, ২ চামচ মেথির গুড়া, একটি ডিম ও এবং কালোজিরার তেল
একসাথে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। তারপর
আধা ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।এটি চুলে দিলে চুলের গোড়া শক্ত হবে,
খুশকি দূর হব,চুল লম্বা হবে অর্থাৎ চুলের জগতে সমস্যার সমাধান হবে। আপনি এটি
নিয়মিত ব্যবহার করুন সপ্তাহে তিন দিন তাহলে দেখবেন কতটা ভালো রেজাল্ট পেয়েছেন।
এছাড়াও মেথির সাথে আরো অনেক কিছু মিক্স করে আপনি হেয়ার প্যাক বানাতে পারেন।
মেথির সাথে মেহেদীর পেস্ট, একটি ডিম, লেবু রস,সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে চুলে
লাগালে চুলের গোড়া শক্ত হয়। চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং চুল দ্রুত বৃদ্ধি করে।
এইভাবে আপনি চুলের যত্ন নিলে চলে যাবত সমস্যা সমাধান মিলবে।
তেলঃ
১ লিটার বিশুদ্ধ নারিকেল তেলের মধ্যে ২ চামচ মেথি, চার পাঁচটি আমলকি, ২ চামচ
কালোজিরা, কিছু লবঙ্গ, একটু হরিতকি এবং ১ চামচ তিসি একসাথে জাল দিন। ভালোভাবে জাল
করা হলে তেলটি নামিয়ে নিয়ে ছেকে নিন। তারপর ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি কাঁচের
বোতলের মধ্যে তুলে সংরক্ষণ করুন। এই তেলটি ব্যবহার করলে চুলের যাবতীয় সমস্যা
সমাধান হয়ে যাবে। এই তেলটি থেকে খুব দ্রুত ফলাফল পেতেছেন চাইলে নিয়মিত ব্যবহার
করুন।
কালোজিরার সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর পর্ব
কালোজিরা সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর পর্ব আপনাদের সুবিধার্থে নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
প্রশ্নঃ কালোজিরা খাওয়ার সঠিক সময় কখন?
উত্তরঃ কালোজিরা খাবার সঠিক সময় নেই। আপনি যে কোন সময় কালোজিরা খেতে
পারেন। আপনি সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেতে পারেন আবার ভাতের সাথে কালোজিরা ভর্তা
খেতে পারেন। হাতে টেলি ও কালোজিরা ভেজে খাওয়া যায়।
প্রশ্নঃ টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়?
উত্তরঃ টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে সর্দি-কাশি,অ্যাজমা, এলার্জির থেকে শুরু
করেএছাড়া শরীরের যত সমস্যা রয়েছে সব সমস্যার সমাধান মেলে।
প্রশ্নঃ প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কিডনির সমস্যা হতে পারে এছাড়াও যাদের
ত্বকে প্রচন্ড অ্যালার্জির সমস্যা তাদের ত্বকে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি বেড়ে যেতে
পারে।
প্রশ্নঃ কালোজিরা ভর্তা কিভাবে করতে হয়?
উত্তরঃ কালোজিরা ভর্তা করার জন্য একটি কড়ায় কালোজিরা ভালোভাবে ভেজে নিতে
হবে যাতে পুড়ে না যায়। তারপর কিছু রসুন শুকনা মরিচ এবং পেঁয়াজ একসাথে ভেজে
নিতে হবে তেলে। এরপর কালোজিরা এবং রসুন শুকনা মরিচ ও পেঁয়াজ একসাথে বেটে নিলেই
কালোজিরার ভর্তা তৈরি হয়ে যাবে। এটি খুব টেস্টি এবং উপকারী।
প্রশ্নঃ কালোজিরার স্বাদ কেমন?
উত্তরঃ কালোজিরার স্বাদ বলতে এটি একটি শক্তিশালী ভেষজ প্রতিকার। এটি খেতে
ঝাঁঝ লাগে। তবে এটি খুবই টেস্টি এবং উপকারী।
লেখক এর শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকে আমি আমার আর্টিকেলে কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা
সম্পর্কে আপনাদেরকে জানিয়েছি। কালোজিরা এমন একটি ঔষধ যা আমাদের শরীরের সকল রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতায় কার্যকারী। এমন কোন রোগ নেই যে রোগের প্রতিশোধক এটি নয়। তাই
কালোজিরার সঠিক ব্যবহার এর মাধ্যমে মিলবে আমাদের রোগের নিরাময়।
রোগ থেকে মুক্তি পেতে কালোজিরার ৩৭টি ঔষধি গুনাগুন ও সর্তকতা সম্পর্কে অবগত হন
এবং এর সঠিক ব্যবহার করুন। আশা করি আমার এই পোষ্টে আপনার অনেক ভালো লেগেছে। তো
বন্ধুরা আপনারা যদি আমার এই পোষ্টটি পড়ে উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের
মাঝে শেয়ার করবেন। আর এই ধরনের আরো পোস্ট পেতে আমাকে নক করতে ভুলবেন না।
ধন্যবাদ।
রিজু ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url