পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ

পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ নিয়ে আপনি কি চিন্তিত? তো বন্ধুরা পিনাট বাটার এর পুষ্টিগুণ নিয়ে আপনাকে একদমই চিন্তা করতে হবে না। এই খাবার বাচ্চা থেকে বুড়ো সবার পছন্দের এবং প্রিয় খাবার।
পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ
পিনান বাটারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন যে এতে কত পরিমাণের পুষ্টিগুণ রয়েছে। আজকের আর্টিকেল জুড়ে পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ নিয়ে আলোচনা করব। তাই আর দেরি না করে খুব দ্রুত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন।

সূচিপত্রঃ পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ আলোচনা

পিনাট বাটার কি

পিনাট বাটার কি এটি সম্পর্কে আমরা প্রায় সবাই কমবেশি পরিচিত। কিন্তু যারা জানেন না তাদের জন্য পিনাট বাটারি কি সেটা আমি বিস্তারিত বলছি। পিনার বাটার হল চিনা বাদাম থেকে তৈরি এক ধরনের মাখন। চিনা বাদাম সম্পর্কে জানিনা এমন কেউ নেই। চীনা বাদাম আমরা সবাই চিনি। চিনাবাদাম মূলত মাটি থেকে উৎপাদিত হয়। তারপর এটি আমরা বিভিন্ন প্রসেসে খেয়ে থাকি। 

কেউ কাঁচা ভাবেও খায় আবার কেউ ভাজা হিসাবে খেয়ে থাকি। এটি হচ্ছে সাধারণ প্রসেস। বাদাম আমরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি। এই বাদাম আমরা ভর্তা হিসেবেও খায়। ডেজার্টে বাদামের ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশের মানুষ বিশেষ করে ডেজার্ট জাতীয় জিনিসে বাদাম বেশি ব্যবহার করে। আর এই বাদাম স্বাস্থ্য উপকারী ভাবে তৈরি করে আমরা মাখন হিসাবেও খেতে পারি। 

আর এটিই হচ্ছে পিনাট বাটার। পিনাট বাটারের গুন অনেক। পিনাট বাটার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাছাড়া পিনাট বাটার খেতেও অনেক মজার। পিনাট বাটার পছন্দ করে না এমন কেউ নেই। সব বয়সের মানুষেরাই পিনার বাটার অনেক পছন্দ করে। বিশেষ করে বাচ্চারা এটি বেশি পছন্দ করে। তাই আপনারা আপনাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পিনার বাটার রাখতে পারেন।

পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ

পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। কেননা পিনাট বাটারের পুষ্টিগুণ জানাটা খুবই দরকার। আপনারা কি জানেন ১০০ গ্রাম পিনাট বাটনের কি পরিমান পুষ্টিগুণ থাকতে পারে। আর এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপযোগী। আপনাদের জানোর জন্য নিম্নে ১০০ গ্রাম পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ তুলে ধরা হলোঃ
পুষ্টিগুন সমূহ পরিমান
চর্বি ৫১.১ গ্রাম
প্রোটিন ২২.৫ গ্রাম
খাদ্য আঁশ ২.৯১ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ২২.৩ গ্রাম
স্টার্চ ৩.৬৩ গ্রাম
ফাইবার ৪.৮ গ্রাম
ভিটামিন ই ৯.১১ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৩৩৯ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ১৬৯ মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ৫৬৪ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ৪২৯ মিলিগ্রাম
জিংক ২.৫৪ মিলিগ্রাম
স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ১০.১ গ্রাম

পিনাট বাটারের উপকারিতা

পিনাট বাটারের উপকারিতা জানতে চান তাহলে পড়তে থাকুন। এতক্ষন আমরা পিনাট বাটারের পুষ্টিগুণ সমূহ সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা পিনাট বাটারের উপকারিতা সম্পর্কে জানব। পিনাট বাটার এর উপকারিতা বহুগুনে। পিনাট বাটার এর উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হবেন। এটি শরীরের বিশেষ বিশেষ উপকারে সহায়ক। নিম্নে পিনাটবাটারের উপকারিতা আলোচনা করা হলোঃ

প্রোটিনের উৎসঃ
পিনাট বাটারের রয়েছে প্রোটিনের উৎস। যাদের শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি রয়েছে তারা পিনাট বাটার খেতে পারেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি বেশি দেখা যায়। তারা তাদের শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে পিনাট বাটার খেতে পারে।

কোলেস্টেরল কমাতেঃ
শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে পিনাট বাটার সেবন করতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমবে। এবং আপনি সুস্থ থাকবেন। তবে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে এই পিনাট বাটারের মধ্যে যাতে চিনি যুক্ত না থাকে। কারন চিনি যুক্ত পিনাট বাটার কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ
পিনাট বাটারে রয়েছে ফাইবার আর এই ফাইবার শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। তাই যাদের হজম শক্তির সমস্যা তারা তাদের প্রতিদিনের খাবারে পিনাট বাটার রাখবেন। পিনাট বাটার আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ
পিনাট বাটারে রয়েছে ফাইবার। আর এই পিনাট বাটার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে কলেজ এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ
পিনার বাটার মহিলাদের জন্য খুবই উপকারী। স্তন ক্যান্সার মহিলাদের হয়ে থাকে। স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পিনাট বাটার বাটার এর গুরুত্ব অনেক। বিশেষ করে চিকিৎসকরা তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে মহিলাদের তাদের খাবারের তালিকায় পিনাট বাটার রাখতে বলেন।

ক্ষুধা কমায়ঃ
পিনাট বাটার ক্ষুধা কমায় এবং শরীরে ক্লান্ত ভাব দূর করে ও শক্তি যোগায়। আমরা অনেকে আছি একটু পরপরই অনেক ক্ষুধা লাগে। এটি বিশেষ করে ডায়াবেটিকস রোগীদের বেশি হয়ে হয়ে থাকে। আবার যারা ডায়েট করছেন তাদেরও একটু পর পর ক্ষুধা লাগে। এক্ষেত্রে আপনাকে বারবার খাবার খেতে হয়। আপনি প্রতিদিন যদি পরিমাণ মতো পিনাট বাটার খেতে পারেন তাহলে আপনার ক্ষুধার ভাব কমিয়ে আপনার শরীরে এটি শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে।

হাড় মজবুতঃ
পিনাট বাটারে রয়েছে ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। আর এই দুটি উপাদান শরীরের হাড় মজবুত করতে সহায়ক। আপনি আপনার বাচ্চার খাবারের পিনাট বাটার নিয়মিত দিন তাহলে আপনার বাচ্চার হার গঠনের এটি যথেষ্ট ভূমিকা পালন করবে। এবং হারকে মজবুত করবে।

মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর গতিশীলতাঃ
পিনাট বাটারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ক্যালসিয়াম। যা খাওয়ার ফলে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর গতিশীলতা বৃদ্ধি করে। এবং এটি রক্তের সঞ্চালন বাড়ায়। এছাড়াও পিনাট বাটার খাওয়ার মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

হার্ট ভালো রাখতেঃ
পিনাট বাটারে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের নানা সমস্যার সমাধান করেন। এবং হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে। হার্ডকে সচল ও গতিশীল রাখতে সহায়তা করে।

ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সরবরাহঃ
আমাদের শরীরে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের দরকার। আর এই ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ শরীরের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। পিনাট বাটার খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সরবরাহ হয়।

ওজন কমায়ঃ
পিনাট বাটার ওজন কমাতে সাহায্য করে। পিনাট বাটারে যে ধরনের চর্বি বা ফ্যাট রয়েছে সেটি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয়। এটিতে যে ফ্যাট রয়েছে সেটি আমাদের শরীরে আলাদাভাবে ওজন বাড়ায় না বরং ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটি শরীরের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

পিনাট বাটারের অপকারিতা

প্রিয় পাঠক আপনি আমি আমরা সবাই জানি প্রত্যেকটা জিনিসেরই যেমন ভাল দিক রয়েছে ঠিক তেমনি খারাপ দিক রয়েছে। এক্ষেত্রে পিনাট বাটারেও কিছু অপকারিতা রয়েছে। তো চলুন কি সেই অপকারিতা বা ক্ষতিকারক দিক সেগুলো জানা যাকঃ
  • পিনাট বাটার অতিরিক্ত খাবার ফলে যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তাদের করতে পারে। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • চীনা বাদাম যদিও উপকারী তবে এতে অনেকেরই এলার্জি সমস্যা থাকতে পারে। যাদের অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা তারা ফিনাট বাটার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • পিনাট বাটার অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে নির্দিষ্ট পরিমাণে পিনাট বাটার খেতে হবে।
  • অতিরিক্ত পিনাট বাটার সেবনের মাধ্যমে শরীরে ওজন বাড়তে পারে। তাই যারা ডায়েট করছেন তারা খুব বেশি পরিমাণে পিনার বাটার খেতে পারবেন না।
  • অতিরিক্ত চিনির জাতীয় পিনাট বাটার ডাইবেটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর। তাই আপনাকে ন্যাচারাল পিনাট বাটার দেখে কিনতে হবে যাতে এটিতে চিনি যুক্ত না থাকে। আর যদি আপনি বাসায় এই বাটার তৈরি করতে চান তাহলে চিনি ছাড়া বাটারটি তৈরি করুন।
তাই আপনাকে পিনাট বাটার খাওয়ার সময় অবশ্যই সচেতন হতে হবে। আপনি এমন কোন পিনাট বাটার কিনবেন না যেটিতে চিনি যুক্ত থাকে এবং যা আপনার শরীরকে সুস্থের চাইতে অসুস্থতা বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া পিনার বাটার থেকে উপকার পেতে হলে আপনাকে পরিমাণের তুলনায় বেশি খাওয়া যাবে না। এটি আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে। যদিও এটি স্বাস্থ্যকর আপনি এটি নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে পারেন সেটাই আপনার জন্য উপযুক্ত হবে।

ডায়েট চার্টে পিনাট বাটার

ডায়েট চার্ট এ পিনার বাটার খুবই পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার। আপনি কি ডায়েট করছেন? যদি আপনি ডায়েট করতে চান বা ডায়েট করা অবস্থায় আছেন এমন হলে আপনার ডায়েট চাটে পিনাট বাটার একটি উত্তম পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার হতে পারে। কেননা পিনাট বাটারে এমন কোন পুষ্টি উপাদান নেই যে আপনি পাবেন না। পিনাট বাটারে রয়েছে ভরপুর পুষ্টি উপাদান। 
আপনি ডায়েট চাটে পিনাট বাটারের বিভিন্ন ধরনের খাবার রয়েছে যেগুলো খেতে পারেন। এবং এই খাবারগুলা আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং স্বাস্থ্যকর হবে। আপনি বিনাট বাটার দিয়ে মিল সেক তৈরি করে খেতে পারেন। আপনারা জানেন মিলসেকে কতটা পুষ্টি রয়েছে। আপনি মিলসেকের সাথে সামান্য পরিমাণে পিনাট বাটার এড করে নিয়ে খেতে পারেন। 
পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ
আপনার ডায়েটের জন্য যে সবজি বা সালাত খান সেগুলোর সাথে পিনাট বাটার মিক্স করে খেতে পারেন। এতেও আপনার ডায়েটের জন্য যথেষ্ট উপকারী। ডায়েটের জন্য আপনি স্যুপের সাথে পেনাল্ট বাটার এড করে খেতে পারেন এ থেকে আপনি যথেষ্ট উপকার পাবেন। কয়েক ধরনের ফল একসাথে কেটে নিয়ে তার সাথে পিনাট বাটার এড করে খান। এখান থেকেও আপনি যথেষ্ট পরিমাণে উপকার পাবেন।

এছাড়াও আপনি ব্রেড, টোস্ট, কুকিজ এগুলোর সাথেও পিনাট বাটার লাগিয়ে নিয়ে খেতে পারেন। এর থেকেও যথেষ্ট পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকবেন। তাই আপনার ডায়েট চার্টের যদি পিনাট বাটার এখনো অ্যাড না করে থাকেন তাহলে এক্ষুনি পিনাট বাটার এড করুন এতে করে আপনার ডায়েট চার্ট হবে পুষ্টি সমৃদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর। ডায়েট চার্টে পিনাট বাটার শরীরকে করে শক্তিশালী ও সতেজ।

ডায়াবেটিস রোগের জন্য পিনাট বাটার

ডায়াবেটিস রোগের জন্য পিনাট বাটন অতুলনীয়। আমরা মনে করি বাটার ডায়াবেটিস রোগে কোলেস্টেরল বাড়ায় কিন্তু এটি একদমই ভুল ধারণা। দূর থেকে যে বাটার তৈরি হয় সেটি থেকে কোলেস্টেরলের মাথা বেড়ে যেতে পারে বেশি। কিন্তু পিনাট বাটার ডায়াবেটিস রোগে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। কারণ এটিতে চিনি থাকে না। যদি এটি হোমমেড বাটার হয় তাহলে সেটি আরো ভালো ডায়াবেটিস রোগীর জন্য। 
ডায়াবেটিস রোগীরা খুব সামান্য পরিমাণে পিনার বাটার নিয়মিত খেতে পারলে তাদের স্বাস্থ্যের জন্য কোন ঝুঁকি হবে না। বরং ডায়াবেটিস রোগের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে তার অতিরিক্ত ক্ষুধার ভাব কমিয়ে দেয়। রোজ দিন নিয়মিত পিনাট বাটার খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়। এছাড়া এটি প্রতি দিন নিয়মিত খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস রোগীর অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।

পিনাট বাটার এর মূল্য

পিনাট বাটারের মূল্য সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। যেহেতু পিনাট বাটার একটা পুষ্টির সমৃদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর খাবার। তাই এটির প্রাইস তুলনামূলক অন্যান্য জিনিসের চাইতে একটু বেশি। বাজারে বিভিন্ন ফ্লেভারের বিভিন্ন কোম্পানির পিনার্ট বাটার রয়েছে। আপনার পছন্দ অনুযায়ী আপনি বাজার থেকে পিনার বাটার কিনে নেবেন। বাচ্চারা চকলেট পিনাট বাটার পছন্দ করে। 

বাজারে চকলেট বাটারও রয়েছে প্রায় সব ধরনের পিনাট বাটার রয়েছে। কোম্পানি ভেদে এই পিনার বাটার গুলোর দাম একটু কম বেশি হতে পারে। আপনি যে কোম্পানি বাটার পছন্দ করেন সেটির কিনতে পারেন। ৫০০ গ্রাম ডিসকভারি পিনাট বাটার এর দাম ৬৫০ টাকা। নিউট্রিনাটস প্রিমিয়াম পিনাট বাটার এক কেজির দাম ১১৫০ টাকা। 

তিস্তা ফুড এর পিনাট বাটার ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। আপনি আপনার পছন্দ মত পিনাট বাটারটি ক্রয় করে নেবেন। আপনি যদি ইন্ডিয়ান পিনাট বাটার ক্রয় করতে চান তাহলে করতে পারেন। এতে কোন সমস্যা নেই তবে ইন্ডিয়ান প্রোডাক্ট এর দাম একটু বেশি হবে। তাছাড়া ইন্ডিয়ান প্রোডাক্ট অনেকটাই ভালো হয় অন্যান্য প্রোডাক্ট এর তুলনায়। আপনি নির্দ্বিধায় এটি কিনতে পারেন।

ঘরে তৈরি পিনাট বাটারের রেসিপি

ঘরে তৈরি পিনাট বাটারের রেসিপি। আপনি বাজার থেকে পিনাট বাটার কিনে নিয়ে এসেও খেতে পারেন। আবার ঘরে তৈরি করে পিনাট বাটার খেতে পারেন। কেনার চাইতে হোমমেড রেসিপি তৈরি করলেন আপনি যেমন ন্যাচারাল একে বাটার পাবেন তেমনি আপনার খরচ বেঁচে যাবে। তাই আপনি পিওর পিনাট বাটার খেতে চাইলে ঘরে তৈরি পিনাট বাটার হতে পারেন। যেভাবে ঘরে বসে পিনাট বাটারের রেসিপি তৈরি করবেনঃ
পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ
  • প্রথমে বাজার থেকে আপনি চীনা বাদাম কিনে নিয়ে আসবেন। আপনার দেশের চিনা বাদামও নিতে পারেন এতে কোন সমস্যা নেই।
  • এরপর বাদাম গুলোকে ভালোভাবে রোস্ট করে নিবেন।
  • তারপর রোস্ট করা হয়ে গেলে বাদাম থেকে চোচা ছাড়িয়ে নিবেন।
  • এরপর বাদাম গুলোকে ব্লেন্ডারে মধ্যে দিবেন। এবং এর সাথে স্বাদমতো সামান্য বিট লবণ দিয়ে ব্লেন্ড করবেন যতক্ষণ পর্যন্ত বাদামে তেল না বের হচ্ছে।
  • বাদাম থেকে বাদামের তেল বের হয়ে গেলে বুঝবেন ব্লেন্ড করা হয়ে গেছে এটি যদি একটু নরম করতে চান এর সাথে আপনি তেল মেক্স করবেন।
  • তারপর আবার ব্লেন্ড করবেন। এইভাবে কয়েকবার ব্লেন্ড করে যখন একেবারে মাখনে পরিণতহয়ে যাবে তখন এটি একটি জারে ঢেলে নিয়ে পরিবেশন করুন।
  • পিনাট বাটারটি বেশি দিন পর্যন্ত রাখার জন্য আপনি এর মধ্যে কোন প্রকার দুধ এড করতে পারবেন না।
  • এই পিনার বাটার এর মধ্যে দুধ করলে মাখনটি নরম হবে কিন্তু বেশিদিন থাকবে না।
  • আপনি যদি পিনার বাটনে মিষ্টি খেতে চান এর সাথে মধু বা চিনি এড করতে পারেন। চিনি টা ডায়াবেটিসের জন্য উপযুক্ত নাই। তাই মধু দেওয়াটাই শ্রেয়।

    পিনাট বাটার সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর পর্ব

    আপনাদের সুবিধার্থে পিনাট বাটার নিয়ে আপনাদের সামনে কিছু প্রশ্ন এবং সেই প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরা হলো। যাতে আপনারা পিনাট বাটার সম্পর্কে সঠিক ধারণাটি পেতে পারেন।

    প্রশ্নঃ পিনাট বাটার কি বেশি প্রোটিন থাকে?
    উত্তরঃ পিনাট বাটার একটি জনপ্রিয় খাবার। প্রায়শই এর উচ্চ প্রোটিন সামগ্রীর জন্য প্রশংসিত হয়। এটি দুই টেবিল চামচ পরিবেশন আট গ্রাম প্রোটিন প্যাক করে। এটি বিভিন্ন স্নাক্স বা খাবারে প্রোটিন যোগ করার একটি সহজ উপায় করে তোলে।

    প্রশ্নঃ পিনাট বাটার খেলে কি পেট খারাপ হয়?
    উত্তরঃ পিনাট বাটার হজমের সমস্যা যেমন ফোলা ভাব গ্যাস এবং পেটের অস্বস্তির মতো উপসর্গগুলি থেকে মুক্তি দিতেও সাহায্য করতে পারেন। কারণ পিনাট বাটারে স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে যা পরিপাকতন্ত্রকে তৈলাক্ত করতে এবং অস্ত্রের মধ্যে দিয়ে খাদ্যের চলাচল উন্নত করতে সাহায্য করে।

    প্রশ্নঃ পিনাট বাটার কি ফ্রিজে রাখতে হয়?
    উত্তরঃ পিনাট বাটার ফ্রিজে রাখার দরকার নেই কারণ এটি খোলার পরে তিন মাস পর্যন্ত ঘরের তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যেতে পারে যতক্ষণ এটি একটি শীতল শুকনো জায়গায় সংরক্ষণ করা হয় এবং ঢাকনা শক্তভাবে বন্ধ থাকে। যদি আপনি চান রাখতে পারেন এতে কোন সমস্যা নেই।

    প্রশ্নঃ পিনাট বাটারের স্বাদ কেমন?
    উত্তরঃ পিনাট বাটার নোনতা, মিষ্টি সুস্বাদু, এবং স্বাদযুক্ত যেন প্রতিটি অংশ স্বাদ বের করার জন্য চিনা বাদাম ভাজা হয়েছে।

    প্রশ্নঃ পিনাট বাটার কোন ফ্লেভারের ভালো?
    উত্তরঃ পিনাট বাটার সবচেয়ে জনপ্রিয় স্বাদ্গুলি হল ক্রিমি, অরিজিনাল, ক্রাঞ্চি এবং চকলেট।

    প্রশ্নঃ ওজন কমাতে কোন পিনাট মাখন ভালো?
    উত্তরঃ পিন্টোলা অল ন্যাচারাল পিনার বাটার আমাদের তালিকা শীর্ষে রয়েছে এছাড়াও ইন্ডিয়ান পিনাট বাটার অনেক জনপ্রিয়। তিস্তা ফুডের পিনাট বাটারও অনেক ভালো।

    প্রশ্নঃ পিনাট বাটার কাদের খাওয়া উচিত নয়?
    উত্তরঃ আপনি যদি মোটা হয়ে থাকেন বা ওজন কমাতে চান তাহলে পিনাট বাটার খাওয়া ক্ষতিকর। কিডনির জন্য ভালো নাই পিনাট বাটার এর মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ এর জন্য বিপদজনক হতে পারে। তাই কিডনি সংক্রান্ত রোগ থাকলে পিনাট বাটার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

    লেখকের শেষ মন্তব্য

    প্রিয় পাঠক আজকে আমি আপনাদেরকে এই পুরো আর্টিকেলটি জুড়ে পিনাট বাটারের উপকারিতা, অপকারিতা, পুষ্টিগুণ,এর দাম রেসিপি সবকিছুই শেয়ার করেছি। আপনি নিশ্চয় আর্টিকেলটি পুরোপুরি ভালোভাবে পড়লে বুঝতে পারবেন পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ সম্পর্কে। আপনি যদি আমার এই পিনাট বাটারের বিশেষ পুষ্টিগুণ সমূহ সম্পর্কে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। যাতে করে আপনারা আপনার বন্ধু এই পোষ্টটি পড়ে উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    রিজু ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url