শসার উপকারিতা ও অপকারিতা - শসা খাওয়ার ১৬টি উপকারিতা
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? আপনি যদি শসার
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান হলে আমার এই পোস্টটি ভালোভাবে মনোযোগ
সহকারে পড়ুন। এটি অন্যান্য সবজির মধ্যে অন্যতম সবজি। শসা আমরা নানাভাবে খাই এবং
ব্যবহার করে থাকি।
তবে শসা থেকে আমরা ঠিক কি পরিমাণ উপকারিতা পাই এবং শসার কোন অপকারিতা আসে কিনা সে
সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা থাকতে হবে। তাই এটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে আমাদের
সাথেই থাকুন।
সূচিপত্রঃ শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
- শসার পুষ্টি উপাদান
- শসা খাওয়ার ১৬টি উপকারিতা
- শসা খাওয়ার অপকারিতা সমূহ
- গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি
- খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা
- ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম
- শসা খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম
- ত্বকের যত্নে শসার ব্যবহার
- শসার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে লেখকের শেষকথা
শসার পুষ্টি উপাদান
শসা একটি পুষ্টি উপাদানে ভরপুর সবজি। এই পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি আমাদের শরীরে
অনেক ধরনের উপকার করে থাকে। শশাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। কিন্তু
আমরা এই পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে সবাই অবগত নয়। তাই চলুন শসায় কি পরিমাণে
পুষ্টি উপাদান রয়েছে সে সম্পর্কে জানা যাক।
প্রতি ১০০ গ্রাম শসার পুষ্টি উপাদান নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
ক্যালোরি | ১৫ কিলো |
কার্বোহাইড্রেটস | ৩.৬৩ গ্রাম |
প্রোটিন | ০.৬৫ গ্রাম |
খাদ্য আঁশ | ০.৫ গ্রাম |
ফোলেট | ৭ মাইক্রোগ্রাম |
নিয়াসিন | ০.০৯৮ মিলিগ্রাম |
থায়ামিন | ০.০২৭ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন এ | ১০৫ আইইউ |
ভিটামিন সি | ২.৮ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন ই | ০.০৩ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন কে | ১৬.৪ মাইক্রোগ্রাম |
সোডিয়াম | ২ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ১৩ মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | ১৪৭ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ১৬ মিলিগ্রাম |
লৌহ | ০.২৮ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ২৪ মিলিগ্রাম |
জিংক | ০.২০মিলিগ্রাম |
শসা খাওয়ার ১৬টি উপকারিতা
শসা খাওয়ার উপকারিতা বহু গুণ। সারা দেশে চাষ হওয়ার দিক থেকে শসা চার নম্বর
স্থান দখল করেছে।শসায় রয়েছে হরেক রকমের পুষ্টি উপাদান। রূপচর্চা থেকে শুরু
করে শরীরের সকল কাজে এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে শসার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে
না। শশায় থাকা নানা গুনাগুন ও উপকারিতা আজকে আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরব।
নিম্নে শসা খাওয়ার ১৬টি উপকারিতা সমূহ আলোচনা করা হলোঃ
পানি শূন্যতা দূর করেঃ
শসার মধ্যে রয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ পানি। তাই আপনি যদি পানি শূন্যতা দূর
করতে চান তাহলে শসা বেশি করে খেতে পান। আপনি যদি দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে
না পারেন তাহলে আপনি শসা খেতে পারেন। এতে আপনার পিপাসাও মিটবে এবং শসা আপনার
শরীরের পানি শূন্যতা দূর করবে।
শরীরের জ্বালাপোড়া দূর করতেঃ
অনেক সময় শরীরে শরীরের ভেতরে বাইরে অনেক জ্বালাপোড়া করে। এমনকি অতিরিক্ত গরম
থাকার কারণে অনেক সময় শরীরে জ্বালাপোড়া করে। ওই মুহূর্তে আপনি যদি শসা খান
তাহলে আপনার শরীরে জরা পড়া দূর করবে। এছাড়াও মুখে যদি জ্বালাপোড়া করে সে
ক্ষেত্রে আপনি মুখে শসা লাগিয়ে রাখতে পারেন মুখের জ্বালাপোড়া দূর হবে।
শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতেঃ
শসায় থাকা পানি আমাদের শরীরে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। তাই শরীরে
বিষাক্ত পদার্থের দূর করার জন্য আপনি পরিমাণ মতো শসা প্রতিদিন খাবেন।
আরো পড়ুনঃ
সজনে পাতা খাওয়ার নিয়ম
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ
প্রতি দিন আমাদের শরীরে যে পরিমাণে ভিটামিনের দরকার পরে সেটি মূলত শসার মধ্যে
রয়েছে। শসার মধ্যে ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে থাকায় আমাদের শরীরে সকল প্রকার রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। যা আমাদের শরীরে ভিটামিনের ঘরটি পূরণ
করে।
ভিটামিনের অভাব পূরণঃ
সসাই রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি। আর এই ভিটামিন এ বি সি
আমাদের শরীরে ভিটামিনের অভাব পূরণ করে এবং শক্তি জগতের সাহায্য করে। আপনি যদি
শসার সাথে গাজর এবং সবুজ শাকসবজি একসাথে মিক্স করে জুস বানিয়ে খান তাহলে এই তিন
ধরনের ভিটামিন সমানভাবে পাবেন।
ত্বকের যত্নে শসাঃ
ত্বকের যত্নে শসার উপকারিতা অন্যতম। বাসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম
সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম। থাকার ফলে এই তিনটি উচ্চ মাত্রায় থাকার ফলে ত্বকের
পরিচর্যা ভূমিকা যথেষ্ট। এটি ত্বককে উজ্জ্বল ও ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনি
নিয়মিত ত্বকের যত্নে শসার ব্যবহার করতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে শসার ভূমিকা অন্যতম। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা
রয়েছে। তারা নিয়মিত খেতে পারেন। কেননা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে শসার ভূমিকা বহু
গুনে। শসা রয়েছে যথেষ্ট পুষ্টি উপাদান যার দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
সহায়ক।
চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতেঃ
আমাদের অনেকেরই চোখের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল। যাদের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল তারা বেশি
বেশি শসা খেতে পারেন। এটি খুবই পরীক্ষিত এবং ডাক্তার সাজেস্ট একটা পরামর্শ। তাই
আপনি চোখে যদি বৃদ্ধি করতে বেশি বেশি শসা খান।
চোখের নিচের কালো দাগ দূর করঃ
আমাদের অনেকের চোখে নিচে ডাক সার্কেল পড়ে। ডার্ক সার্কেল দূর করতে আমরা অনেকে
অনেক ধরনের জিনিস ব্যবহার করি বা অনেক ধরনের মেডিসিন ব্যবহার করি। আপনি যদি
প্রাকৃতিক উপায়ে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে চান তাহলে শসা স্লাইস করে কেটে
চোখের উপরে দিয়ে রাখুন। রূপ চর্চার ক্ষেত্রে যেমন এটি ব্যবহার করা হয় ঠিক তেমনি
চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে এটি যথেষ্ট উপকারী।
ছানি পড়া ঠেকাতে কার্যকরীঃ
চোখের প্রদাহ প্রতিরোধক উপাদান খুব বেশি পরিমাণে থাকায় শসা চোখের ছানি পড়া
ঠেকাতে খুব ভালোভাবে কাজ করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ
অনেকেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। কিন্তু আপনি যদি একটু সচেতন হয়ে প্রতিনিয়ত শসা
সঠিক নিয়মে খেতে পারেন তাহলে এটি ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ
করে। তাই এটি আপনার খবরের তালিকায় নিয়মিত রাখুন।
দাঁতের চিকিৎসায় শসাঃ
যাদের মুখে প্রচুর দুর্গন্ধ এবং মাড়ির দাঁতের সমস্যা তাদের ক্ষেত্রে শসা খুবই
কার্যকারী। আপনি যদি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে চান তাহলে আপনি একটি শসা স্লাইস
করে কেটে একটি গোলাকার শসার চাকা মুখের মধ্যে দিয়ে জিব্বার উপর চাপ দিয়ে ধরে
তখন আধামিনিট ধরে রাখুন এতে করে শসার মধ্যে থাকা সকল উপাদান দুর্গন্ধ দূর করতে
সাহায্য করবে।
চুল ও নখের যত্নেঃ
শসার মধ্যে যে খনিজ ও সিলিকা থাকে এটি চুল ও নখের যত্নে ব্যবহার করলে চুল অন্য
সতেজ এবং শক্তিশালী হয়। তাছাড়া চুল বৃদ্ধিতে শসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা
শসাতে রয়েছে সিলিকা এবং সালফার যা চুল বড় করতে সাহায্য করে।
গেটে বাতের ব্যথা দূর করতেঃ
শশায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সিলিকা। আপনি যদি গাজর এবং শসার রস একসাথে মিস করে
খেলে দেহের ইউরিক এসিড নেমে আসে যা খেলে আপনার গেটে বাতের ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
মাথা ধরা দূর করেঃ
আমাদের অনেকেরই ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর ম্যাচ ম্যাচ করে এবং মাথা ধরে। আপনি যদি
এই মাথা ধরা দূর করতে চান তাহলে ঘুমানোর আগে একটি শসা খেয়ে নিতে পারেন। এতে
করে ঘুম থেকে ওঠার পর আপনার শরীর আর ম্যাচ ম্যাচ করবে না এবং মাথাও ধরবেনা।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারীঃ
শসা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী। শসাডায়াবেটিস রোগীর দেহের কোলেস্টেরল
কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে। এবং ডায়াবেটিস রোগের যদি উচ্চ রক্তচাপ
থাকে তাহলে সেটি কমাতে সাহায্য করে। শুধু ডায়াবেটিস রোগী নয় যাদের উচ্চ
রক্তচাপ তাদের শসা খাওয়া খুবই উপকারী।
শসা খাওয়ার অপকারিতা সমূহ
শসা খাওয়ার অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে আপনি জানতে চাচ্ছেন,তাহলে আপনি আমাদের
পোস্টে থেকে সেটি জানতে পারবেন। কোন কিছু অতিরিক্ত ভালো না। সবকিছুই ক্ষতিকারক
দিক থাকে। যদিও পুষ্টিকর একটি সবজি কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। আপনারা ভাবছেন
কিন্তু ক্ষতিকারক দিক কিভাবে থাকে।
তো বন্ধুরা ক্ষতিকারক দিক নেই বললেই চলে কিন্তু যদি আপনি খেয়ে ফেলেন তাহলে
সেখান থেকে আপনার ক্ষতি সম্ভাবনা থাকবে। যে কোন জিনিসেরই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক
না। অতিরিক্ত কোন কিছু খেলে সেটি স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর ও
ঝুঁকিপূর্ণ। তেমনই সসল ক্ষেত্র এক। তো চলুন শসা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আপনার যে
ধরনের ক্ষতি হতে পারে সেটি জানা যাক।
- আপনি যদি অতিরিক্ত শসাখ খান তাহলে আপনার পেট ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে শসা খেলে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- রাতের বেলা শসা খেয়ে এসো ঘুমালে সেটি সঠিকভাবে হজম হয় না তাই সবার আগে শসা না খায় ভালো। কারণ এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে ঘটাতে পারে।
- শসা পানির পরিমাণ বেশি থাকায় যারা কিডনির রোগী তাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে শসা খেলে কিডনি রোগীর কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে শসা খেলে আপনার ক্ষুধা মন্দা তৈরি হতে পারে।
- শসাতে রয়েছে কিউকুর বিটাচিন। শসা বেশি খেলে শরীরে টক্সিন এর পরিমাণ বেড়ে যায়। যার শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।
তো বন্ধুরা আপনারা এখন বুঝতে পেরেছেন শসা অতিরিক্ত খাওয়ার অপকারিতা গুলো কি
কি। নিজে কোন জিনিসকে লক্ষ্য করবেন যে যে কোন জিনিসই অতিরিক্ত হয়ে গেলে সেটি
ভালো ফিডব্যাক দেয় না। তেমনি স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে একই রকম স্বাস্থ্য ভালো
রাখতে কোন জিনিসই অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। তো আমরা আপনাদেরকে শসার উপকারিতা ও
অপকারিতা উভয় জানিয়েছি।
গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কিনা এটা জানতে চাচ্ছেন,তাহলে জানুন গর্ভাবস্থায়
শসা খাওয়া অবশ্যই অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকারী। গর্ভাবস্থায় খাওয়া
একদম নিরাপদ। গর্ভকালীন অবস্থায় একজন গর্ভবতী নারীর মন মেজাজ এবং শারীরিক দিক
খুবই সেনসিটিভ ও পরিবর্তন হয়। গর্ভবতীর মহিলার মন মেজাজ ভালো ও চাঙ্গা রাখতে
চিকিৎসকরা গর্ভবতী মহিলাকে শসা খাওয়ার জোর তাগিদ দেয়।
কেননাশসা রয়েছে ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম সিলিকা জিংক আইরন ভিটামিন বি6 ভিটামিন
বি9 আরও অনেক উপাদান। এই সবগুলো উপাদানে একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য খুবই উপকারী।
ভিটামিন বি6 এবং ভিটামিন বি9 প্রচুর পরিমাণে থাকায় এটি গর্ভবতী মহিলার মেজাজকে
ঠান্ডা রাখে এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্ত রাখে। তাছাড়া শসায় রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে পানি যা গর্ভবতী মহিলার শরীরে পানি শূন্যতার অভাব পূরণ করে।
এছাড়াও শসা খাওয়ার মাধ্যমে কোন গর্ভবতীর যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়ে থাকে
তাহলে সে সমস্যা দূর হয়ে যায়। কোন গর্ভবতী যদি হরমোনের সমস্যা থাকে বা
রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় রাখার দরকার পরে তাহলে অবশ্যই সে নিয়মিত তার খাবার
তালিকায় শশা রাখবে। এতে তার এই ধরনের সমস্যা গুলো দূর হয়ে যাবে। তবে অবশ্যই
গর্ভবতীকে পরিমাণ মতো শসা খেতে হবে। পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত শসা খাওয়া তার
জন্য ক্ষতিকর হবে।
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা বহুগুণ বেশি। আমরা শসার উপকারিতা ও অপকারিতা
জেনেছি এবার আমরা এটি সম্পর্কে জানব। কেননা আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে
শসা খান তাহলে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শশায় সব ধরনের
পুষ্টি উপাদান পরিমাণ মত রয়েছে। এটি আপনার শরীরকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। খালি পেটে এর উপকারিতা অনেক বেশি। এটি যে শুধু রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতায় বৃদ্ধি করে এটা নয়।
এর পাশাপাশি যাদের মেয়েদের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে শসা
খেলে বেশ উপকার পাবে। এছাড়াও খালি পেটে শসা খেলে যাদের অতিরিক্ত গ্যাসের
সমস্যা সেই গ্যাস দূর হয়ে যাবে। কিন্তু কখনোই রাতে ভরা পেটে শসা খাবেন না কারণ
শসা হজম হওয়ার একটা ব্যাপার রয়েছে তাই রাতে না খেয়ে আপনি সকালে খালি পেটে
শসা খান এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের বদহজমের এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা
সমাধান হয়ে যাবে।
ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন নিয়ম করে ভোরবেলায় খালি পেটে শসার রস বা জুস বা
শসা খেতে পারে তাহলে তাদের জন্য এটি খুবই ভালো। এর ফলে তাদের ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণে আসে। খালি পেটে শসা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে
এটি শরীরের সকল পরিমাণ টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে শরীরকে সুস্থ সরল ও
সতেজ রাখতে সহায়তা করে। যা শসার উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে পড়ে।
ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম
ওজন কমাতে শসা খাওয়া অপরিহার্য বলা হয়। আমরা কম বেশি সবাই ওজন নিয়ে চিন্তিত।
অতিরিক্ত ওজন হয়ে গেলে আমাদের চিন্তার শেষ থাকে না। আমরা শুধু ভাবি কিভাবে
আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারবো। আর এই কথা ভাবতে ভাবতে আমরা অনেকে ভুল
সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। অনেকে বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে নানা ধরনের ভুলভাল
মেডিসিন কিনে সেবন করে।
আরো পড়ুনঃ
ডিমের পুষ্টিগুন সমূহ আলোচনা
আর এই মেডিসিন খাওয়ার ফলে তার শরীরে বাড়তি ওজন কমাতে দূরে থাক বরঞ্চ তার
শরীরে অন্যান্য আরো সমস্যার সৃষ্টি করে। আপনি যদি কোন প্রকার মেডিসিন ছাড়া
১০০% প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর থেকে ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি সঠিক নিয়মে
শসা খান। তাহলে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে ওজন কমাতে সক্ষম হবেন। আপনি যদি
নিয়মিত খালি পেটে শসা চিবিয়ে খেতে পারেন।
তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি আপনার শরীর থেকে বাট ওজন বা মেদ কমাতে পারবেন। শসায়
উচ্চমাত্রায় পানি ও নিম্নমাত্রায় ক্যালরিযুক্ত উপাদান রয়েছে যা দেহের ওজন
কমাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে আপনার আদর্শ হিসেবে কাজ করবে। যারা খুব
তাড়াতাড়ি দেহের ওজন কমাতে চান তারা শসার সালাত এবং শসা দিয়ে স্যুপ বানিয়ে
খেতে পারেন। আর এটি আপনার ওজন কমাতে আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করবে।
শসা খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম
শসা খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম সম্পর্কে আপনার কি ধারণা আছে। হয়তোবা আপনাদের
এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই আবার অনেকের এ সম্পর্কে ধারণা এবং সচেতনতা দুটোই
রয়েছে। তো বন্ধুরা যাদের এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই তাদের জন্য আজকে আমি সঠিক
তথ্যটি তুলে ধরবো।
- শসা খাবার সঠিক সময় হচ্ছে সকাল বেলা এবং দুপুরবেলা খাবারের সময়। আপনি যদি সকাল বেলা খালি পেটে না খেতে পারেন তাহলে দুপুরবেলায় খাবেন।
- রাতের বেলা শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ রাতের বেলা শসা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
- আপনি শসা থেকে পুষ্টি কর উপাদান পেতে চাইলে অবশ্যই শসার খোসা সহ খেতে হবে। খোসা ছাড়িয়ে শসা খাওয়া যাবেনা এতে সঠিক পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় না।
- অনেক সময় শসার তিতা অংশ অনেকে খেয়ে থাকে। কিন্তু শসার তিতা অংশ কেটে ফেলতে হবে। শসার তিতা অংশ খাওয়া যাবে নাসসশসা খাওয়ার আগে শসাটি ভালোভাবেপানিতে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এতে করে শশায় থাকা সকল পরিমান ব্যাকটেরিয়া দূর হয়ে যাবে।
ত্বকের যত্নে শসার ব্যবহার
ত্বকের যত্নের শসার ব্যবহারে জুরি মেলা ভার। রূপচর্চা এমন কোন জিনিস নিয়ে
যেখানে সাসার ব্যবহার হয় না। শশা একটি প্রাকৃতিক উপাদানকৃত সবজি। এটি শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন কাজ করে ঠিক তেমনি ত্বকের যত্নে এটি খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে শসার রস এবং গোলাপজল একসাথে করে
ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর সেটি বরফ হয়ে গেলে সারা মুখে এবং চোখে ব্যবহার করুন।
এটি চোখের কালো দাগ দূর করবে এবং মুখের উজ্জ্বল ফিরে আনবে।এছাড়াও অতিরিক্ত
ড্রপ সার্কেল যাদের তাদের চোখের উপর শসা গোল স্লাইস করে কেটে দিয়ে রাখুন। এটা
নিয়মিত করলে ডার্ক সার্কেল রিমুভ হয়ে যাবে। এ ছাড়া আপনি আপনার ত্বকের
উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসতে শসার রস এর সাথে লেবু ও মধু মিশিয়ে একটি পেজ
তৈরি করে লাগাতে পারেন এতে করে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে লেখকের শেষকথা
প্রিয় পাঠক আজকে আমি আপনাদের সামনে শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তুলে
ধরেছে। শসা থেকে আমরা কি কি উপকার পাই। শসা অতিরিক্ত খাবার ফলে কি ধরনের ক্ষতি
আমাদের শরীরে করে। আমরা ত্বকের যত্নে কেন শসা ব্যবহার করি। শসার পুষ্টি উপাদান
এবং কিভাবে খেলে শসার থেকে প্রয়োজনীয় উপকারিতা পাবো এসব কিছু আপনাদের মাঝে
তুলে ধরেছি।
আশা করছি আপনারা শসা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। আমার পোস্টটি ভাল
লেগে থাকলে অবশ্যই কমেন্টস সাবস্ক্রাইব এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
রিজু ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url