১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস

আপনি কি ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। ১৬ই ডিসেম্বর হলো মহান বিজয় দিবস। আর এই মহান বিজয় দিবস বাঙালির জীবনে একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়।
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
তাই বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদের মাঝে ১৬ই ডিসেম্বরের অবিস্মরণীয় অধ্যায় নিয়েই বিস্তারিত জানাবো। তাহলে চলুন ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনা করি।

সূচিপত্রঃ ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিস্তারিত আলোচনা

১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা

বিজয় মানে লাল সবুজের পতাকা বিজয় মানে পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা করে না স্থান। বিজয় মানে শোষণ থেকে মুক্তির উল্লাস। বিজয় মানেই ১৬ই ডিসেম্বর। শুরু করছি মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা দিয়ে। ১৬ই ডিসেম্বর হল মহান বিজয় দিবস। এই দিবসটি আমাদের জাতীয় জীবনে অপরিসীম গুরত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত। ১৯৭১ সালে ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের রক্ত নদী পাড়ি দিতে হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের। হারাতে হয়েছে বসতভিটা।

বিভিন্ন পেশার লক্ষ শহীদ আত্মদান আর কোটি মানুষের অশ্রু বিসর্জনের মাধ্যমে আমরা বাঙালি জাতি বিজয়ের গৌরব উপার্জন করেছি। দীর্ঘ নয় মাস এই সময়ে মরন জয় যুদ্ধে অনেক নারী হারিয়েছেন তার কলিজার টুকরোকে। অনেকে হারিয়েছেন তাদের স্নেহময় পিতা-মাতাকে তাদের কান্না আর চিৎকার আকাশ বাতাস কেঁপে উঠেছিল। এরপরে এই জাতির প্রতি মহান আল্লাহ দিয়েছেন রহমতের দৃষ্টি। 

আমরা বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে এনেছি ১৬ই ডিসেম্বরে। পেয়েছি পৃথিবীর মানচিত্র বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশ। পেয়েছি শ্রেষ্ঠ বীরের খেতাব। তাই মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনে এক অহংকার গৌরবের মহান বিজয় গাথা। প্রতিবছর এই দিনটিতে বিজয় দিবস উদযাপিত হয়। এবং আমরা এটি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ ও পালন করি।

১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের তাৎপর্য ও পটভূমি

বিজয় দিবস হচ্ছে বাঙালির জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। এটি বাঙালির ইতিহাস কে মনে করে দেয়। বাঙালি জাতি শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে ছিনিয়ে এনেছে এই বিজয়। তাই আমরা এই বিজয়ের পেয়েছি। পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ। আর এইজন্যেই বাঙালির জীবনে মহান বিজয় দিবস এতটা তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭১ সালে ডিসেম্বর মাসের এই ১৬ তারিখে বিজয় অর্জন করে বাংলার আপামর জনগণ।

 তবে এই স্বাধীনতা কিন্তু আমরা এমনি এমনি পাইনি। এর জন্য রয়েছে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধ মূলত দীর্ঘ নয় মাসের নয়। এই মুক্তিযুদ্ধের শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকে। বাঙালি জাতি এই যুদ্ধ করে শুধুমাত্র পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হিংস্র থাবা থেকে দেশ এবং দেশের মাটিকে রক্ষা করার জন্য। 

১৯৪৭ সালের আগে ব্রিটিশরা এ দেশকে শাসন করতো বাংলাদেশ ছিল ব্রিটিশদের অন্তর্ভুক্ত। ব্রিটিশরা দশ বছর শাসন করে এবং এই শাসনের দশ বছর পর স্বাধীনতা পায় ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশ হয়ে যায় পাকিস্তানি রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত। আমরা সবাই জানি পাকিস্তানের রাষ্ট্র ছিল দুটি অংশে বিভক্ত। একটি হলো পূর্ব পাকিস্তান আরেকটি হলো পশ্চিম পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তান হলো বাংলাদেশ এবং পশ্চিম পাকিস্তান হলো পাকিস্তানি রাষ্ট্র। 

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এর মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শুরু করে। এভাবেই একটার পর একটা আন্দোলনে লিপ্ত হতে থাকে বাংলার আপমর জনগণ। পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে বাংলার জনগণ ৬২, ৮৬ এর ছাত্র আন্দোলন এবং ১৯৭০ এর গণঅভ্যুথন এর ডাক দেয়। আর এভাবেই শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। 

বিজয় দিবসের প্রেক্ষাপট

বিজয় দিবসে প্রেক্ষাপট হলো ১৯৪৭ সালের ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পাকিস্তানিরা। তারপর পাকিস্তানিরা বাংলাদেশকে শাসন করতে থাকেন। এবং শোষণ করতে থাকার ফলে এক পর্যায়ে বাঙালি যাতে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে থাকে এবং বাংলার সকল জনগণ এক হয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এবং পূর্ব পাকিস্তানের মূল উদ্দেশ্য ছিল তারা পূর্ব বাংলার ভাষার কে কেড়ে নিবে। 
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
পূর্ব বাংলা মানুষের ভাষা হবে পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষা। তারা উর্দু কে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল। কিন্তু শুরু থেকেই বাঙালিরা পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক আচরণ সহ্য করতে করতে যখন তারা রাষ্ট্রভাষার ওপর আঘাত হানে ঠিক তখনই পূর্ব বাংলার জনগণ সচেতন ও সোচ্চার হয়ে ওঠে। 
কারণ কোনোভাবেই তাদের রাষ্ট্র ভাষাকে উর্দু করতে দেবে না।পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা হবে বাংলা ভাষা। এভাবে করতেন করতে করতে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পরেও পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানীদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চাচ্ছিল না। ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে তারা ষড়যন্ত্র চালাতে শুরু করে। 

আর এই ষড়যন্ত্রের কারণে তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের নেতৃত্বে বাংলার জনগণ এক হয়। এবং ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে বাংলার জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নয় মাস যুদ্ধ হয় এবং অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর পক্ষে উপস্থিত হয় লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী। 

এবং মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করে জেনারেল জগজিৎ সিং অরোর। মুক্তিযুদ্ধে সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী তখন সিলেটে অবস্থান করায় তার পক্ষে উপস্থিত থাকেন মুক্তিযুদ্ধের সহ অধিনায়ক এক এ খন্দকার। বিকাল ৪ঃ০০ টায় ৩১ মিনিটে জেনারেল নিয়াজী আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন। এবং বাঙালিরা পায় মহান বিজয়।

১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বরে তৎকালীন ঢাকার অবস্থা

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পাকহানাদার বাহিনীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরহ বাঙালি জনগণের উপর। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পরে পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল তখন থেকে পূর্ব বাংলার যে নেতৃবৃন্দ গুলো ছিল তারা বুঝতে পেরেছিল যে পশ্চিম পাকিস্তানরা পূর্ব পাকিস্তান কে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। এবং এর জন্য তারা নানা তালবাহানা করছিল।

আর এটিকে কেন্দ্র করে বাংলার নেতৃবৃন্দ এবং শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার জনগণকে একত্রিত করে তাদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য উজ্জীবিত করছিল। আর এর ফলে বাংলার জনগণ যখন একের পর এক আন্দোলনে রাস্তায় নামতে শুরু করে তখন পাকহানার বাহিনীরা গোপনে গোপনে ষড়যন্ত্র শুরু করে। 
আরো পড়ুনঃ
আর এটি অনুমান করতে পেরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাথে মার্চ ঢাকার সহরওয়ার্দী উদ্যানে বাংলার জনগণের মাঝে একটি ভাষণ দিয়ে যুদ্ধের ঘোষণা দেন। ভাষণটি ছিল মুক্তির সংগ্রাম "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম" আর এই ভাষণের পরে পাকিস্তানিরা পঁচিশে মার্চে রাত্রে নিরীহ বাঙালি জাতির উপর ঝাপিয়ে পড়ে। 

আর এই ২৫ শে মার্চ এর রাত্রিতে পাকিস্তানি বাহিনীরা সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে এবং পিলখানা সারা ঢাকায় তান্ডব চালিয়ে যায়। এরই সাথে সাথে বুদ্ধিজীবীদেরও তারা হত্যা করে। শুধু ঢাকায় নয় ঢাকার আশেপাশে প্রায় পুরো বাংলাদেশের মেইন মেইন জায়গায় তারা আক্রমণ চালায়। তারা ঢাকাকে রক্তপুরিতে পরিণত করে। এবং তখন ওই রাত্রিতে ঢাকাতে তারা নিশ্চিহ্ন করে তার চেষ্টা চালায়।

বাঙ্গালীদের জীবনে বিজয় দিবসের গুরুত্ব

বাঙ্গালীদের জীবনে বিজয় দিবসের গুরুত্ব অনেক। কেননা বাঙালির এই বিজয় এমনি এমনি আসেনি। এ বিজয় পেয়েছে বাংলার মানুষ ৩০ লক্ষ শহীদ এবং মা-বোনের সম্ভ্রম এর বিনিময়ে। বাঙালিরা এই বিজয় কখনোই ভুলতে পারবে না। বাঙালিরা এই বিজয়কে সারা জীবন মনে রাখবে। এই বিজয় যদি না আসতো বাঙালিরা কখনোই বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারত না। তাই এই বিজয় দিবস বাঙ্গালীদের জীবনে এতটা গুরুত্ব পূর্ণ।

১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ সালে বাংলাদেশের কততম বিজয় দিবস

বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আর এই স্বাধীন সার্বভৌমত দেশের জন্য শুধু যে এই দেশের মানুষের ত্যাগ রয়েছে এটা শুধু নয় বাংলাদেশের সাথে সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশকে নানাভাবে সাহায্য করেছে। তবেই বাংলাদেশ তার লক্ষে পৌছাতে পেরেছে। তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বাংলাদেশকে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করেছেন। 
আরো পড়ুনঃ
শুধু তাই নয় বাইরের রাষ্ট্র গুলো বাংলাদেশকে যথেষ্ট ভাবে সাহায্য করেছে। বাহিরের শক্তিশালী কুটনৈতিক দেশগুলো মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের এই ১৬ই ডিসেম্বরে তার স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৯৭১ সাল থেকে আজকের এই ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫২ বছর পূর্ণ করেছে। তাই বলা যায় ২০২৪ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের ৫২ তম বিজয় দিবস।

বিজয় দিবসের প্রকৃত অর্থ ও সারমর্ম

বিজয় দিবসের প্রকৃত অর্থ ও সারমর্ম সেখানে যেখানে স্বাধীনতার অর্জনের পর স্বাধীনতাকে সম্মানের সাথে ধরে রাখতে পারা। এটাই হচ্ছে বিজয় দিবসের প্রকৃত অর্থ ও সারমর্ম। যেকোনো জিনিসের বিজয় খুব সহজে আসে না। বিজয়ের জন্য অনেক ত্যাগ করতে হয়। কিন্তু এই ত্যাগ যদি আমরা মনেপ্রাণে অনুভব করতে না পারি তাহলে এর প্রকৃত বিজয় আমাদের জন্য নয়। বিজয় দিবসের প্রকৃত অর্থটা কি?

এটা যদি একজন নাগরিক বুঝতে পারে তাহলে বিজয় দিবসের সার্থকতা সেখানেই। তাই আপনার এবং আমাকে আমাদের সবাইকে বিজয় দিবসের প্রকৃত অর্থটা বুঝতে হবে এবং মনেপ্রাণে লালন করতে হবে। যে রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের এই দেশকে পেয়েছি। আমাদের ভাষা স্বাধীনতা পেয়েছি আমাদের চলার স্বাধীনতা পেয়েছি এই স্বাধীনতা যতই কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে। 
সেই জন্য আমাদের সব সময় সোচ্চার থাকতে হবে। যে দেশকে স্বাধীন করতে এতো ত্যাগ আমাদের করতে হয়েছে এটি যাতে কোন কূটনৈতিক চক্র বা কোন স্বার্থন্বেষী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ আমাদের এই স্বাধীনতা কেড়ে নিতে না পারে সেই দিকে আমাকে আপনাকে এবং আমাদের সমাজকে সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আসুন আমরা সবাই এক হই এবং দেশের জান মাল রক্ষায় নিজেকে নিয়ে যেতে রাখি।

প্রতিবছর বিজয় দিবসের বাঙালির কর্মকান্ড

প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জীবনে মহান একটি দিবস ঘনঘটা হয় ফিরে আসে। আর এই দিবসটি হচ্ছে বিজয় দিবস। এই দিনে বাঙালিরা এই দিবসকে নানাভাবে উদযাপন করে থাকে। ১৬ই ডিসেম্বরে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সরকারের প্রধানমন্ত্রী ভোর বেলায় শহীদদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্প স্তবক অর্পণ করে।
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
এবং সরকারি নির্দেশনায় সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শহীদদের স্মরণে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিভিন্ন মসজিদ মন্দির এবং বিভিন্ন উপাসনালয় তাদের জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। এই দিনে বাঙালিরা ভোট থেকে স্মৃতিসৌধে শহীদদের স্মরণে ফুল ফুল দিয়ে তাদের সম্মান জানায়। এছাড়াও ১৬ই ডিসেম্বরে সকাল থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এবং শহীদদের স্মরণে নানা ধরনের অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়। 

এবং এই দিনের সকল বেতার কেন্দ্রে নানা ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। যা স্বাধীনতা ইতিহাসকে মনে করিয়ে দেবে এবং মানুষের মধ্যে জাগ্রত হবে এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই দিনে এতিমখানা, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম বিভিন্ন জায়গায় উন্নত খাবার এর আয়োজন করা হয়। এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবনদানকারীদের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়। এভাবেই প্রতিবছর বাঙালিরা বিজয় দিবস উদযাপন করে থাকে।

বিজয় দিবস সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর

আমরা সবাই ১৬ই ডিসেম্বরের সম্পর্কে জানি। কিন্তু তারপরও কিছু কিছু বিষয় আমরা ভুলে যাই। তাই জাতির স্বার্থে দেশপ্রেম জাগ্রত হওয়ার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে সুনির্দিষ্ট এবং সুস্পষ্ট ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। যাতে স্বাধীনতা নিয়ে কোন ব্যক্তি কোন প্রশ্ন থাকলে সেটির সঠিক উত্তরটি পেতে পারে। এই বিষয়ে যাদের জ্ঞান কম তাদেরকে বোঝাতে পারে। চলুন প্রশ্ন উত্তর গুলো জানা যাক।

প্রশ্নঃ বিজয় দিবস কি ছুটির দিন?
উত্তরঃ বিজয় দিবস বিভিন্ন দেশে সরকারি ছুটির জন্য, একটি সাধারণভাবে ব্যবহৃত নয় যেখানে এটি একটি যুদ্ধে একটি শত্রু শক্তির বিরুদ্ধে একটি জাতির বিজয় বা শত্রু দখল থেকে একটি দেশের মুক্তি কে স্মরণ করে।

প্রশ্নঃ বিজয় দিবস আমরা কেন পালন করি?
উত্তরঃ বিজয় দিবস হল বাংলাদেশের একটি জাতীয় ছুটির দিন। যার আসলে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর পরাজয় এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্মরণে পালিত হয়।

প্রশ্নঃ ডিসেম্বর কিসের জন্য বিখ্যাত?
উত্তরঃ ডিসেম্বর অনেক কিছুর জন্য বিখ্যাত। যেমনঃ ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস, ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি বিরোধী দিবস, ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস, ১১ ডিসেম্বর ইউনিসেফ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী দিবস, ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। মূলত এই সমস্ত বিষয়ের জন্য ডিসেম্বর অনেক বিখ্যাত।

প্রশ্নঃ বিজয় দিবসের অর্থ কি?
উত্তরঃ বিজয় এর প্রকৃত অর্থ হলো বিজয় সুফলকে জনগণের দ্বার গড়ায় পৌঁছে দেওয়া। কারণ বিজয়ের অর্জন এর চেয়ে বিজয় ধরে রাখাটা খুবই কঠিন। তাই এই বিজয়টা যাতে মানুষ মনেপ্রাণে লালন করতে পারে সেটির ব্যবস্থা করাই হচ্ছে বিজয়ের প্রধান উদ্দেশ্য।

প্রশ্নঃ বিজয়ের পূর্ণ অর্থ কি?
উত্তরঃ বিজয়ের পূর্ণ অর্থ হলো প্রতিকূলতা বা অসুবিধার বিরুদ্ধে লড়াই বা প্রচেষ্টায় দক্ষতা বা সাফল্য অর্জন।

লেখক এর শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আজকে আমি আপনাদের মাঝে ২০২৪ সালে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস সম্পর্কে তুলে ধরেছি। মহান বিজয় দিবস প্রত্যেকটি বাঙালির জন্য একটি গৌরব এর বিষয়। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন এবং বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এই মহান বিজয়ের কারণে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আমরা এখনো কেউ পায়নি। অথচ আমরাই প্রতিকূল ও অসভ্য শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম।এর জন্য ৩০ লক্ষ শহীদ হয়েছে উদ্বাস্ত হয়ে গেছে কোটি মানুষ।

তাই এখন সময় এসেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মশাল করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। আর এই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। তবে আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা আমাদের জীবনের অর্থবহ হয়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ। আশা করছি ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস সম্পর্কে আপনারা সঠিক ধারণা পেয়েছেন। বুঝতে পেরেছেন বিজয় দিবস কি। আমার এই আর্টিকেলটি  কাছে ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক এবং শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রিজু ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url